—প্রতীকী চিত্র।
শনিবার ২৩ বছর পরে, দার্জিলিং ও কালিম্পঙে দ্বিস্তরীয় পঞ্চায়েত ভোট। শান্তির পরিবেশ বজায় রেখে ভোটে নামার জন্য দলীয় নেতা-কর্মী এবং বিরোধীদের কাছে আবেদন জানিয়েছেন ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ)-এর প্রধান অনীত থাপা। বাবার চিকিৎসার জন্য হায়দরাবাদে থাকলেও, শান্তিপূর্ণ ভোটের আবেদন করেছেন হামরো পার্টির সভাপতি অজয় এডওয়ার্ডও। এরই মধ্যে এ দিন সকালে সুখিয়াপোখরির মানেভঞ্জন এলাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত নির্দল ডোমা শেরপা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চায় শামিল হন।
শুক্রবার দিনভর শেষ পর্বের প্রস্তুতি এবং এলাকায় নজরদারিতে ব্যস্ত ছিল সব দল। বিশেষ করে, গ্রামে রাত পাহারার খবর বহু এলাকা থেকেই মিলেছে। টাকা ও জিনিসপত্র বিলি এবং প্রলোভন ঠেকাতে দু’পক্ষই নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছে। বিরোধী শিবিরের রাজু বিস্তা থেকে বিমল গুরুং, মন ঘিসিংয়েরা দলীয় দফতর, বাড়ি থেকে ভোটের প্রস্তুতি নিয়েছেন।
প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সভাপতি অনীত থাপা বলেন, ‘‘পাহাড়ে শান্তি ফিরেছে। পাহাড়ের গ্রামের উন্নয়নের জন্য পঞ্চায়েতি রাজ চালু হওয়ার মুখে। শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। উৎসবের মেজাজে সব এলাকায় ভোট হবে।’’ তিনি জানান, বিভিন্ন এলাকা থেকে নির্দল, দলের প্রতিনিধি ও প্রার্থীরা যোগাযোগ করছেন। তাঁর বক্তব্য, নির্দল দলে আসায় বোঝা যাচ্ছে, প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা পুরসভা, জিটিএ-র পরে পঞ্চায়েত স্তরেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে চলেছে। যদিও বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তার দাবি, ‘‘শাসকের দুর্নীতি, প্রলোভন এড়িয়েই নতুন আলোর জন্য ভোট দেবেন মানুষ। যৌথ গোর্খা মঞ্চের প্রার্থীরা জিততে চলেছেন।’’
বৃহস্পতিবার প্রচার শেষ হয়েছে। শুক্রবারও পাহাড়ের শাসক দলের তরফে প্রার্থীরা প্রচার করেছেন বলে হামরো পার্টির অভিযোগ। অজয় এডওয়ার্ড বলেন, ‘‘দার্জিলিঙের বহু এলাকা থেকে প্রচারের খবর পেয়েছি। বহু এলাকায় ত্রিপল বিলি হয়েছে। নির্বাচন কমিশন, জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।’’ প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার তরফে অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
বিরোধীদের অভিযোগ, শুক্রবার বিকেলের পর থেকে পাহাড়ের একাধিক গ্রামের ‘নিয়ন্ত্রণ’ নেওয়ার চেষ্টা শুরু হয়েছে। পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী পর্যাপ্ত না থাকার সুযোগে সন্ধ্যার পরে, গ্রামে-গ্রামে শাসক দলের হয়ে কাজ করার কথা, পোলিং এজেন্ট না হওয়ার কথা বলা হয়েছে বলে অভিযোগ। বিরোধী এজেন্টদের মাঠে না নামার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ। যদিও রাত অবধি লিখিত অভিযোগ হয়নি।
পুলিশ সূত্রের খবর, দার্জিলিঙে ২৭টি ‘স্পর্শকাতর’ এলাকা রয়েছে। সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে পুলিশের সঙ্গে মোতায়েন রাখা হয়েছে। প্রত্যেক থানা এলাকায় ‘ক্লোজ়ড-সার্কিট ক্যামেরা’র নজরদারির বন্দোবস্ত রয়েছে। দার্জিলিঙের জেলাশাসক এস পুন্নমবলম এবং জেলা পুলিশ সুপার প্রবীণ প্রকাশ জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনের নিয়মাবলি মেনেই বন্দোবস্ত করা হয়েছে।