কোচবিহার হাসপাতালে মেরামত করা হয়নি ভাঙা সুইচবোর্ড। — নিজস্ব চিত্র।
গত চার বছরে অন্তত চার বার আগুনের আতঙ্ক ছড়িয়েছে। তারপরেও কোচবিহার জেলা সদর এমজেএন হাসপাতালে অগ্নিনির্বাপক পড়িকাঠামো পুরোপুরি গড়ে ওঠেনি। মুর্শিদাবাদের ঘটনার জেরে এবার ফের ওই সমস্যা নিয়ে রোগীর পরিজনদের থেকে বাসিন্দাদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। চিন্তা বেড়েছে জেলার তুফানগঞ্জ, মাথাভাঙা, দিনহাটা ও মেখলিগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালের পরিকাঠামো নিয়েও। বক্তব্য হল, যে কোনও দুর্ঘটনার পরে ওই সমস্ত পরিকাঠামোর খোলনলচে বদলে দেওয়া নিয়ে আলোচনা চলে, টুকটাক কিছু কাজ হয়। কিন্তু পুরোপুরি নিরাপদ অবস্থা এতদিনেও তৈরি হয়নি। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অবশ্য বলেন, ‘‘সমস্ত হাসপাতালের নিরাপত্তার ব্যাপারে জোর দেওয়া হয়েছে। নজর রয়েছে।”
চাঁচল
অপারেশন থিয়েটার থেকে একতলার প্রসূতি বিভাগ পর্যন্ত সর্বত্র বিপজ্জনক ভাবে ঝুলছে বৈদ্যুতিক তার। এ ছাড়া শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বিভাগে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র নেই। গোটা হাসপাতালে সাকুল্যে দেখা মিলেছে দু’টি অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র। কিন্তু নবীকরণ না করায় কার্যত অকেজো হয়ে রয়েছে। আবার গোটা হাসপাতাল থেকে বের হওয়ার জন্য একটিমাত্র পথই ভরসা। বহরমপুরের ঘটনার পরদিন এই ছবিটাই ধরা পড়েছে মালদহের চাঁচল মহকুমা হাসপাতালে। শয্যা না মেলায় প্রসূতি বিভাগের সামনের করিডরে সদ্যোজাতকে নিয়ে রয়েছেন রামপুরের রুমকি দাস, মাথার উপরেই ঝুলছে বৈদ্যুতিক তার। হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার তথা বিএমওএইচ প্রদীপকুমার বারুই বলেন, ‘‘সব খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
রায়গঞ্জ
একাধিক ওয়ার্ডে গড়েই ওঠেনি অগ্নিনির্বাপণ পরিকাঠামো। যে সব ওয়ার্ডে ছিল, একমাস আগে সে সব অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রের মেয়াদও উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছে। রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে আচমকা অগ্নিকাণ্ড হলে, কী ভাবে সামাল দেওয়া সম্ভব, সেই প্রশ্নে আতঙ্ক ছড়িয়েছে রোগীদের মধ্যে। হাসপাতাল সুপার গৌতম মন্ডল ও উত্তর দিনাজপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জগন্নাথ সরকারের দাবি, মঙ্গলবারের মধ্যেই সমস্যা মিটবে। জরুরি বিভাগ, মহিলা মেডিসিন ও প্রসব পরবর্তী প্রসূতি ওয়ার্ডে অগ্নিনির্বাপণের কোনও পরিকাঠামোই নেই। সবচেয়ে ভয়াবহ বিষয় হল, একাধিক শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র থাকলেও ব্লাডব্যাঙ্ক ও ডিজিটাল এক্সরে ওয়ার্ডে এখনও পর্যন্ত গড়ে তোলা হয়নি অগ্নিনির্বাপণ পরিকাঠামো।
ইসলামপুর
বছর চারেক আগে ঝুপড়িতে লাগা আগুন থেকে সামান্যের জন্য রক্ষা পেয়েছিল ইসলামপুর হাসপাতাল। এখানে মহিলা পুরুষ মিলে শয্যা সংখ্যা প্রায় ১৮০টি। এলাকার বাসিন্দাদের বক্তব্য, ওই ঝুপড়িটিও সরানোর জন্য যথেষ্ট উদ্যোগ নেই। প্রশাসন জানিয়েছে, ঝুপড়ির বাসিন্দাদের অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা নিয়ে খুব তাড়াতাড়ি আলোচনায় বসা হবে।