অজান্তে: তখনও হাইকোর্টের রায়ে বাজি বিক্রি নিষিদ্ধ ঘোষণা হয়নি। আলিপুরদুয়ারে বাজি বিক্রি চলছিল। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র।
এ বছর কালীপুজোয় সব রকমের বাজি নিষিদ্ধ করেছে হাইকোর্ট। করোনা পরিস্থিতিতে হাইকোর্টের এই নির্দেশ কার্যকর করতে প্রশাসন যাতে সব রকমের ব্যবস্থা নেয়, এখন সেটাই চাইছেন আলিপুরদুয়ার জেলার চিকিৎসকেরা। প্রশাসনের কর্তারা অবশ্য জানিয়েছেন, হাইকোর্টের নির্দেশ কার্যকর করতে সব ব্যবস্থাই নেওয়া হবে।
প্রতি বছরই কালীপুজো আর দীপাবলিতে আলিপুরদুয়ার জেলার বিভিন্ন জায়গায় ব্যাপকহারে আতশবাজি পড়ানো হয় বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, আতশবাজি পোড়ানোর সঙ্গেই দেদারে ফাটানো হয় নিষিদ্ধ শব্দবাজিও। কালীপুজো ও দীপাবলি থেকে শুরু হয়ে যার রেশ চলে ছটপুজো পর্যন্ত। নিষিদ্ধ শব্দবাজি ফাটানো রুখতে কালীপুজোর আগে থেকেই পুলিশ-প্রশাসন তৎপর হলেও, কোনওবারই তা রোখা যায় না বলে অভিযোগ রয়েছে। যা নিয়ে প্রতিবারই পরিবেশপ্রেমী বিভিন্ন সংগঠনের কর্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
কিন্তু এ বার করোনা পরিবেশে শুধু শব্দবাজিই নয়, আতশবাজি পোড়ানো বন্ধের জন্যেও বারবার সাওয়াল করে আসছেন চিকিৎসকেরা। আলিপুরদুয়ার জেলার চিকিৎসকদের একাংশের কথায়, বাজির থেকে হওয়া বায়ুদূষণের ফলে করোনায় আক্রান্তের হার বেড়ে যেতে পারে। করোনায় আক্রান্ত কিংবা করোনা যুদ্ধে জয়ীদের ফুসফুসেও ক্ষতি করে বিপদ ডেকে আনতে পারে বায়ুদূষণ। এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের রায়ে স্বাভাবিকভাবেই খুশি আলিপুরদুয়ারের চিকিৎসকেরা।
আলিপুরদুয়ারের সিএমওএইচ গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “হাইকোর্টের নির্দেশ এখনও হাতে পাইনি। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে বাজি নিষিদ্ধ হওয়াটা খুবই জরুরি।”
প্রত্যেকবারই পুজো শেষ হতেই আলিপুরদুয়ারের বিভিন্ন বাজারে বাজির দোকান বসে যায়। করোনা পরিস্থিতিতে এ বারও যার ব্যাতিক্রম হয়নি। স্বাভাবিকভাবেই এ দিনের হাইকোর্টের রায়ে জেলার বাজি ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত পড়ে গিয়েছে।
আলিপুরদুয়ার টাউন ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক প্রসেঞ্জিৎ দে বলেন, “প্রতিবার দুর্গাপুজোর অনেক আগে থেকেই বাজির বাজার নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। সেই অনুযায়ী দোকানও বসে। তবে হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করার কোনও প্রশ্ন নেই। রায়ের কপি জেলায় এলেই পদক্ষেপ করা হবে। তবে শেষ লগ্নে হাইকোর্টের এই রায়ে ব্যবসায়ীরা যেমন মার খাবেন, তেমনই অনেকেই রুটি-রুজি হারাবেন।”
আলিপুরদুয়ারের মহকুমাশাসক রাজেশ বলেন, “হাইকোর্টের নির্দেশ এখনও হাতে পাইনি। তবে নির্দেশে যেমনটা বলা থাকবে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”