গজলডোবায় চাষিদের বিক্ষোভ। —ফাইল চিত্র
গজলডোবায় প্রস্তাবিত উড়ালপুলের কাছে জমি জট নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে আলোচনার দরজা খুলেছে সরকার। কৃষকদের সঙ্গে সরকারি আধিকারিকদের একপ্রস্থ আলোচনা হয়েছে। তাতে উঠে এসেছে নানারকমের দাবি। আজ, সোমবার মিলনপল্লির কৃষকদের সঙ্গে ফের আলোচনার কথা রয়েছে সরকারি আধিকারিকদের। তার আগেই নতুন ফতোয়া জারি করল ভূমিরক্ষা কমিটি। শনিবার কমিটির একটি বৈঠকের পরে এলাকার কৃষকদের জানানো হয়েছে, সরকারি আধিকারিকরা কথা বলতে এলে তাঁরা যেন কমিটির নেতাদের ছাড়া কথা না বলেন।
গত সপ্তাহে উড়ালপুলের জমি থেকে স্থানীয়দের সরে যাওয়ার জন্য বলে আলোচনা করেছিলেন সরকারি আধিকারিকরা। তখন তাঁদের কাছে কৃষকরা জমির ক্ষতিপূরণ, বিকল্প জমি এবং ‘ভোরের আলো’ প্রকল্পে চাকরির দাবি জানিয়েছিলেন। রবিবার মন্ত্রী গৌতম দেব জানিয়েছেন, কৃষকদের বিকল্প জমি এবং সেই জমিতে সরকারি প্রকল্পে বাড়ি করতে সাহায্য করার প্রস্তাব দেওয়া হবে। তাছাড়া পরিবার থেকে একজন করে ‘ভোরের আলো’য় কর্মসংস্থানের প্রস্তাব দেওয়া হবে।
প্রকল্পের হেলিপ্যাডের জমি নিয়েও সমস্যা হয়েছিল। সেই বিষয়ে কৃষকদের সঙ্গে সংঘাতে না গিয়ে হেলিপ্যাড দূরে সরিয়ে সমস্যা মিটিয়ে ফেলা হয়েছে। কিন্তু নতুন করে জট বেঁধেছে হেলিপ্যাড থেকে ‘ভোরের আলো’ পর্যটনকেন্দ্রে আসার জন্য উড়ালপুলের জমি নিয়ে। সেখানে ১৪টি পরিবারের জমির অধিকারের দাবি নিয়ে সরব হয়েছে ভূমিরক্ষা কমিটি। এ দিন সংগঠনের চেয়ারম্যান নকুল দাস বলেন, ‘‘কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা না করে ভূমিরক্ষা কমিটির সঙ্গে আলোচনা করতে হবে বলে আমরা আগেই জানিয়েছিলাম। কিন্তু তারপরেও আলোচনা হয়েছে। নতুন করে আলোচনায় কৃষক এবং স্থানীয়দের যেতে না করা হয়েছে।’’
পর্যটন দফতর সূত্রে খবর, গত সপ্তাহের বৈঠকে কৃষকদের করা দাবি নিয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেন আধিকারিকরা। তাঁদের দাবি, উড়ালপুলের কাছে থাকা পরিবারগুলোর সবার পাট্টা নেই। তবে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করেই কাজ হবে। সরকারি সূত্রে খবর, কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা করেই জট খোলার চেষ্টা হবে, আলাদা করে ভূমিরক্ষা কমিটিকে আলোচনায় সামিল করা হবে না। পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘সরকার কৃষকদের দাবির প্রতি সহানুভূতিশীল। সরকারি জমির উপর কারও পাট্টা নেই। তারপরেও তাঁদের যা প্রস্তাব সরকারি তরফে দেওয়া হয়েছে, তা অনেকটাই।’’ পর্যটন দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, আলোচনা করেই প্রকল্পের জট খোলার চেষ্টা হচ্ছে প্রথম থেকেই। কিন্তু সেই প্রক্রিয়ায় ভূমিরক্ষা কমিটি কোনওভাবে নাক গলাতে থাকলে আদালতে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না। সোমবারের আলোচনার গতিপ্রকৃতি কী থাকে, আলোচনা আদৌ হয় কিনা এ সবের উপরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নির্ভর করবে বলে জানানো হয়েছে পর্যটন দফতর সূত্রে।