আক্রান্ত: মশারি ছাড়াই জ্বরের রোগী। কোচবিহার হাসপাতালে। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব
জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পরপর রোগী মৃত্যুর জেরে উদ্বেগ বেড়েছে কোচবিহারে জুড়ে। খোঁজখবর শুরু করেছেন প্রশাসনের কর্তারাও।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিস্থিতি পর্যালোচনায় স্বাস্থ্য দফতর, পুরসভা-সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরের সঙ্গে বৈঠক করবে প্রশাসন। মঙ্গলবার ওই বৈঠক হতে পারে। আজ, সোমবার থেকে কোচবিহারের বিভিন্ন পুরসভা এলাকাতেও বিশেষ অভিযান শুরু হচ্ছে। মশাবাহিত রোগের সংক্রমণের আশঙ্কা এড়াতে সচেতনতা থেকে নজরদারিতে স্বনির্ভর গোষ্ঠী সদস্যদের সহযোগিতাও নেওয়া হবে। কোচবিহারের জেলাশাসক কৌশিক সাহা বলেন, “খোঁজ নিচ্ছি। সবাস্থ্য কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এনিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।”
কোচবিহার পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের ২০টি ওয়ার্ডে জল জমে থাকলে মশার সংক্রমণ প্রবণ এলাকা বলে চিহ্নিত করা হবে। বাসিন্দাদের কেউ জ্বরে আক্রান্ত হলে তা নিয়েও দ্রুত খোঁজখবর রাখতে চাইছেন তাঁরা। সেজন্য বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের সহযোগিতা নেওয়া হবে বলে ঠিক হয়েছে।
রবিবার শহরের নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে আয়োজিত একটি সভাতেও ওই ব্যাপারে আলোচনা হয়। কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান ভূষণ সিংহ বলেন, “মশাবাহিত রোগের সংক্রমণের আশঙ্কা রুখতে সব রকম সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। সোমবার থেকে বিশেষ অভিযান চালান হবে। ওই কাজে আমরা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের সহযোগিতা চাইছি। এতে কেউ আক্রান্ত হলে দ্রুত খবর পাওয়া সম্ভব হবে।”
তুফানগঞ্জ ও দিনহাটা পুরসভাতেও ওই ব্যাপারে বাড়তি তৎপরতা শুরু হয়েছে। তুফানগঞ্জ পুরসভার চেয়ারম্যান অনন্ত বর্মা জানিয়েছেন, মশাবাহিত রোগ সংক্রমণের আশঙ্কা নিয়ে আগাম সতর্কতা রয়েছে। ১৭২ জন কর্মী পালা করে বিভিন্ন ওয়ার্ডে সাফাই, জমা জল সরান, স্প্রে’র কাজ করছেন। সোমবার থেকে ওই কাজে আরও জোর দেওয়া হবে। দিনহাটা পুরসভার চেয়ারম্যান উদয়ন গুহ বলেন, “মশা মারতে স্প্রে চলছে। নর্দমা, জলায় মশার লাভা মারতে গাপ্পি মাছও ছাড়া হয়েছে। কোথাও যাতে জল জমে না থাকে দেখা হচ্ছে। কারও বাড়িতে তেমন হলে তাদের সতর্কও করা হচ্ছে।”
মাথাভাঙা, মেখলিগঞ্জ পুরসভা এলাকাতেও ডেঙ্গি থেকে জাপানি এনসেফ্যালাইটিস নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, প্রস্তাবিত বৈঠকে সব পুরসভার পদক্ষেপ, অবস্থা বিশদে খতিয়ে দেখা হবে। বাসিন্দাদের একাংশের অবশ্য অভিযোগ, মুখে যতটা সতর্কতার কথা বলা হয়। বাস্তবে তা হয়না। তার জেরেই মশার উপদ্রব বেড়েছে। তুফানগঞ্জের দুই বাসিন্দা-সহ তিনজনের তিনদিনে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনার জেরে তাই চিন্তা বেড়ে গিয়েছে। স্কুল, কলেজ পড়ুয়াদের মধ্যে সচেতনতার দাবি উঠেছে।