তুষারধসে মৃত্যু হয় শিলিগুড়ির বাসিন্দা সৌরভ রায়চৌধুরীর। ফাইল চিত্র।
অফিসের কাজে আরও তিন জনের সঙ্গে সিকিমে গিয়েছিলেন। স্থানীয়দের কাছে শুনেছিলেন তুষারপাত হচ্ছে। তা দেখতে গিয়েই তুষারধসে মৃত্যু হল শিলিগুড়ির ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের শক্তিগড়ের ১১ নম্বর রাস্তার বাসিন্দা সৌরভ রায়চৌধুরীর। মঙ্গলবার সিকিমের নাথু লা-য় ভয়াবহ তুষারধসে মৃতদের তালিকায় রয়েছেন তিনি। সৌরভের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা এলাকায়।
প্রশাসন সূত্রে খবর, ২৮ বছরের সৌরভ অফিসের কাজে সিকিমে গিয়েছিলেন। সেখানে তুষারপাতের খবর শুনতে পেয়ে তা দেখতে যান সৌরভ। সেই সময় প্রবল তুষারধসে আটকে পড়েন তাঁরা। সৌরভের কাকিমা রুনু রায়চৌধুরি বলেন, “বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান সৌরভ। তাঁদের মানসিক অবস্থা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। এপ্রিলের ১ তারিখে ১৫ দিনের জন্য ও গিয়েছিল সিকিমে।’’ রুনু জানিয়েছেন, সৌরভ যে সংস্থায় কাজ করতেন, তার ম্যানেজারও সঙ্গে ছিলেন। রুনুর কথায়, ‘‘ম্যানেজার বাদে ওঁরা তিন জন তুষারপাত দেখতে গিয়েছিল। এক জন মহিলাও ছিলেন। বাকিরা প্রাণে বাঁচলেও বরফের তলায় চাপা পড়ে যায় সৌরভ। অনেক পরে সৌরভের নিথর দেহ খুঁজে পাওয়া যায়।”
বুধবার সকালে সৌরভের বাড়িতে তাঁর পরিবারে লোকেদের সঙ্গে দেখা করতে যান শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব। সৌরভের পরিবারকে রাজ্য সরকার আর্থিক ভাবে সাহায্য করবে বলে জানিয়েছেন মেয়র। গৌতম বলেন, “খুবই দুঃখজনক ঘটনা। বাড়ির একমাত্র ছেলে। প্রশাসনিক ভাবে সব রকম সহযোগিতা করার কথা বলা হয়েছে। পরিবারের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির দিকেও আমরা নজর রাখব।” তিনি আরও জানান, সিকিমে ময়নাতদন্ত হওয়ার পরে সৌরভের দেহ শিলিগুড়িতে নিয়ে আসা হয়। তুষারধসে আহত বাকি দু’জনের চিকিৎসা চলছে সিকিমেই। তাঁদের মধ্যে এক জন কোচবিহারের বাসিন্দা। অন্য জন থাকেন শিলিগুড়ির চম্পাশরিতে।
মঙ্গলবার সকালে গ্যাংটক থেকে নাথু লা যাওয়ার পথে ১৫ মাইলে হঠাৎই তুষারধস নামে। সেই ধসে পর্যটকদের ৫-৬টি গাড়ি বিপর্যয়ের কবল পড়ে। বরফের তলায় চাপা পড়ে যান প্রায় ২০-৩০ জন পর্যটক। উদ্ধারকাজে নামে সেনাবাহিনী, সিকিম পুলিশ, সিকিমের ট্র্যাভেল অ্যাসোসিয়েশন, পর্যটন দফতরও।