সামাজিক ‘শাস্তি’ গণপ্রহার, মানবিকতায় হার গণরোষের

খবর পেয়ে মালদহ থানার পুলিশ রক্তাক্ত অবস্থায় ওই আনাজ বিক্রেতাকে উদ্ধার করে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হবিবপুর ও চাকুলিয়া শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:২৯
Share:

আক্রান্ত: চর কাদিরপুরে গণপিটুনিতে জখম রাজু নাদাব। নিজস্ব চিত্র

গণপিটুনি রুখতে বিল পাস করেছে রাজ্য সরকার। গণপিটুনির সর্বোচ্চ সাজা রয়েছে মৃত্যুদণ্ড। অথচ গণপিটুনি থামছে না।

Advertisement

এক আনাজ বিক্রেতাকে দেওয়া হল গণপিটুনি। বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা মালদহ থানার চর কাদিরপুর গ্রামে। খবর পেয়ে মালদহ থানার পুলিশ রক্তাক্ত অবস্থায় ওই আনাজ বিক্রেতাকে উদ্ধার করে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে কলকাতার পিজি হাসপাতালে স্থানান্তর করার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গণপিটুনিতে জখম ব্যক্তির বাড়ি ইংরেজবাজার ব্লকে। অভিযুক্তরা পলাতক।

গত বছর মালদহে একাধিক গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছিল। হবিবপুর ব্লকের বুলবুলচণ্ডীতে গণপিটুনিতে এক যুবকের মৃত্যু পর্যন্ত হয়। শেষ পর্যন্ত পুলিশ, প্রশাসন যৌথ ভাবে সচেতনতামূলক প্রচার ও গণপিটুনির ঘটনায় অভিযুক্তদের ধরপাকড় করে পরিস্থিতি কিছুটা আয়ত্তে আনে। এর রেশ কাটতে না কাটতেই ফের গণপিটুনির ঘটনা ঘটল পুরাতন মালদহ ব্লকের চর কাদিরপুর গ্রামে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই আনাজ বিক্রেতার সঙ্গে স্থানীয় এক মহিলার বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল বলে দাবি করা হয়। বিষয়টি নিয়ে দুই পরিবারে সমস্যাও চলছিল। বৃহস্পতিবার রাত দশটা নাগাদ দু’জনকে এক বাড়িতে দেখতে পেয়ে গ্রামবাসীদের কয়েক জন তাঁর উপর চড়াও হন। বাঁশ, লাঠি দিয়ে তাকে বেধড়ক মারা হয়। রাস্তার উপর ফেলে চলে কিল, চড়, ঘুষিও। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে পুলিশ মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করে। তাঁর স্ত্রী বলেন, ‘‘স্বামীর শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। মালদহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাকে কলকাতার পিজি হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করার পরামর্শ দিয়েছেন। আমার স্বামীকে যারা মারধর করল আমি তাদের শাস্তি চাই।’’

এ দিকে ওই ঘটনার পর রাত থেকেই পুরুষশূন্য চর কাদিরপুর এলাকা। পুলিশ সুপার অলক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে। গণপিটুনির ঘটনা বরদাশ্ত করা হবে না।’’

এ দিন উত্তর দিনাজপুরের চাকুলিয়ায়ও দু’টি গণপিটুনির ঘটনা রুখে দিয়েছে পুলিশ। পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রের খবর, আক্রান্তদের এক যুবকের নাম নাইমুল হক। বাড়ি মালদহে। তিনি গ্রামে কাপড় বিক্রি করেন। বিহারের কিসানগঞ্জে ভাড়া বাড়িতে থাকেন। এ দিন ভাড়নার আদিবাসী গ্রাম দিয়ে সাইকেল চেপে কিসানগঞ্জ ফিরছিলেন। তখনই আক্রান্ত হন। সেই সময় এক সিভিক ভলান্টিয়ার যাচ্ছিলেন। তিনি থানায় খবর দেন। পুলিশ দ্রুত গিয়ে ওই ফেরিওয়ালাকে উদ্ধার করে।

বৃহস্পতিবার রাত আটটা নাগাদ তেলিয়াপোখরে এক মাঝবয়সি ব্যক্তিকে দেখে সন্দেহ হয় বাসিন্দাদের। তবে বাসিন্দাদের একাংশই পুলিশে খবর দেন। পুলিশ গিয়ে ওই ব্যাক্তিকে উদ্ধার করে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement