নতুন: গ্লোবের আদলে এই জলাধারই হয়েছে। নিজস্ব চিত্র
ভূগর্ভস্থ জলের অপচয় ঠেকাতে এ বার স্কুলের হাতিয়ার মুখ্যমন্ত্রীর ‘জল ধরো জল ভরো’ প্রকল্প। বৃষ্টির জল ধরে রাখতে স্কুল চত্বরেই মাটির নীচে বড়সড় জলাধার তৈরি করা হয়েছে এই প্রকল্প। তবে সরকারি অর্থে নয়, অভিভাবক ও এলাকার শুভানুধ্যায়ীদের সাহায্য করা অর্থেই হয়েছে জলাধার। শনিবার দুপুরে ইংরেজবাজারের শোভানগর হাইস্কুলে এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেন মালদহের জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য।
শুধু ভূগর্ভস্থ জলাধারই নয়, স্কুলের পড়ুয়াদের পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে জন্য এ দিন পৃথক একটি জলাধারেরও উদ্বোধন করা হয়। জলাধারটি তৈরি করা হয়েছে গ্লোবের আকারে। স্কুলের বক্তব্য, জলের উত্স যে পৃথিবী তা পড়ুয়াদের বোঝাতে ও পৃথিবীর মানচিত্র যেন পড়ুয়ারা চোখের সামনেই দেখতে পারে সেজন্য এই উদ্যোগ।
‘জল ধরো জল ভরো’ প্রকল্পে পঞ্চায়েত স্তরে পুকুর খোঁড়া হচ্ছে জেলার নানা গ্রামে। তবে স্কুলে এই প্রকল্পের কথা তেমন শোনা যায়নি। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর সাধের এই প্রকল্প গড়ার জন্য এই স্কুল কর্তৃপক্ষকে কয়েকমাস আগে উত্সাহ দিয়েছিলেন জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান আশিস কুণ্ডু। প্রধানশিক্ষক হরিস্বামী দাস জানান, বৃষ্টির জল স্কুলের সমস্ত ভবনের ছাদে ধরে রাখা হবে। সেই জল একটি পাইপলাইনের মাধ্যমে আসবে স্কুলেরই এক প্রান্তে মাটির নীচের প্রায় ১৫ হাজার লিটার ধারণক্ষমতা সম্পন্ন জলাধারে। সেই জল বছরভর স্কুলের ফুলের বাগানের পরিচর্যা-সহ নানা কাজে ব্যবহার করা হবে।
স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, যেহেতু ওই জল পরিশোধন করে তা পানীয় জলে রূপান্তরিত করার প্রকল্প গড়তে করতে প্রচুর খরচ, তাই পানীয় জল হিসেবে সেই বৃষ্টির জল ব্যবহার করা যাচ্ছে না। তবে জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতরের তরফে এলাকায় যে আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জল সরবরাহ করা হয় সেই জল নতুন ওই গ্লোবের আদলে তৈরি জলাধারে সংরক্ষিত থাকবে। প্রধানশিক্ষকের কথায়, ‘‘এই পুরো ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে আমরা পড়ুয়াদের সচেতন করতে চাই যাতে ভূগর্ভস্থ জলের অপচয় না করা হয়। কারণ গোটা দেশে যেভাবে জলের অপচয় হচ্ছে তাতে ভবিষ্যতে আমাদের জলসঙ্কটে পড়তে হবে।’’
এ দিন প্রকল্পের উদ্বোধন করে জেলাশাসক বলেন, ‘‘প্রত্যন্ত এলাকার একটি স্কুল এমন প্রকল্প রূপায়ণ করে নজির গড়ল। এজন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যানকে ধন্যবাদ জানাই। ধন্যবাদ প্রাপক এলাকার বাসিন্দারাও, যাঁরা এমন প্রকল্প তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন।’’ আশিসবাবু বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর ভাবনাকে বাস্তবায়িত করতে স্কুলে এমন পরামর্শ দিয়েছিলাম। তাঁরা কার্যকর করলেন।’’ এ দিন স্কুলে বিদ্যাসাগরের একটি আবক্ষ মূর্তিরও উদ্বোধন করা হয়।