কিশোর-কিশোরীকে পাচারের সন্দেহে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে এক সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক-সহ চার জনকে আটক করল রেল পুলিশ।
কিশোর-কিশোরীকে পাচারের সন্দেহে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে এক সরকারি স্কুলের সহকারী শিক্ষক-সহ চার জনকে আটক করল রেল পুলিশ। আটক চার ব্যক্তির মধ্যে দু’জন মহিলা ও দু’জন পুরুষ। সেই সঙ্গে উদ্ধার করা হয়েছে ২১ জন কিশোর ও ৪ জন কিশোরীকে। পুলিশএর দাবি, কৌশিক চৌধুরী নামে এক ব্যক্তির তৎপরতায় ওই কিশোর-কিশোরীদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
শনিবার সন্ধ্যায় এক আত্মীয়কে রাধিকাপুর-কলকাতা এক্সপ্রেসে তুলতে রায়গঞ্জ স্টেশনে এসেছিলেন কৌশিক। ট্রেন স্টেশনে থামার পর তিনি লক্ষ্য করেন, স্টেশন চত্বরে বেশ কিছু কিশোর-কিশোরী হুড়োহুড়ি করছে। আর তাদের সামলানোর চেষ্টা করছেন এক প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি। দেখেই তাঁর সন্দেহ হয়। প্রশ্নও করেন। জবাবে সন্তুষ্ট না হয়েই রেল পুলিশ ও চাইল্ড লাইনে খবর দেন কৌশিক।
পরে কৌশিক বলেন, ‘‘আমার দেখেই কেমন সন্দেহ হয়। আমি ওই ভদ্রলোককে জিজ্ঞেস করলাম, এতগুলো বাচ্চা নিয়ে কোথায় যাচ্ছেন? উত্তরে প্রথমে তিনি বলেন, আত্মীয়ের বিয়েতে যাচ্ছি। নিজেকে সব ক’টা বাচ্চার মামা হিসেবে পরিচয় দেন উনি। তাতেই আমার সন্দেহ আরও বাড়ে। তার পরেই পুলিশে খবর দিই।’’
খবর পেয়েই সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে। পুলিশ আধিকারিকেরাও ওই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। ওই ব্যক্তি জানান, তাঁর নাম মোজাহিদুল ইসলাম। নিজেকে হরিরামপুরের মহেন্দ্র উচ্চবিদ্যালয়ের ‘প্রধান শিক্ষক’ হিসেবে পরিচয় দেন তিনি। যদিও পরে জানা যায়, তিনি আরবির সহকারী শিক্ষক। পুলিশের জেরায় মোজাহিদুল জানান, বাচ্চাদের ঘুরতে নিয়ে যাচ্ছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘এতগুলো বাচ্চাকে সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছি বলে আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঘুরতেই যাচ্ছি। ওই বাচ্চাদের মধ্যেই কেউ পড়ুয়া, কেউ আত্মীয় রয়েছে।’’ কিন্তু পুলিশের করা বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে আরও অসঙ্গতি ধরা পড়তেই তাঁকে আটক করে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই ঘটনায় এক বেসরকারি স্কুল শিক্ষককেও আটক করা হয়েছে।
চাইল্ড লাইনের কর্মীরা সব কিশোর-কিশোরীদের বাড়ির লোকজনকে খবর দেন। চাইল্ড লাইনকর্মী সুব্রত সাহা বলেন, ‘‘এতগুলো বাচ্চাকে উনি একা সামলাচ্ছেন। আর বাচ্চাদের অভিভাবকেরা সঙ্গে নেই। এটা মেনে নেওয়া একটু কষ্টকর। অভিভাবকেরা যে অনুমতি দিয়েছেন, এমন লিখিত কিছুও দেখাতে পারছেন না তিনি।’’