গরুমারার বোতল শিংয়ের গুরুতর অবস্থা। প্রবীণ বোতলের উরু প্রায় ছিন্নভিন্ন। দিন কয়েক আগেও কোনওক্রমে খুঁড়িয়েই হাঁটছিল। এখন তা-ও বন্ধ।
কী করে হল?
স্পষ্ট নয়। তবে, গরুমারা জাতীয় উদ্যানের বনকর্মীরা মনে করছেন, এটা নিছকই গ্যাং ওয়ার’।
বছর কয়েক আগেও, মারকুটে বোতলের শরীর-স্বাস্থ্য ভেঙেছে। তবে, এই বয়সেও রোমিও স্বভাবে ভাঁটা পরেনি। গরুমারা ঘাস জঙ্গলে স্ত্রী-গন্ডার দেখলেই ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টায় খামতি নেই তার। আর তা নিয়েই কানকাটা কিংবা ডনের সঙ্গে লড়াই তার নিত্য। আঘাতটা এমনই কোনও লড়াইয়ের পরিণতি। মধ্য তিরিশের গন্ডার বোতল, আপাতত তাই যাত্রাপ্রসাদ নজরমিনারের সামনে ঘাসবনেই ঘুরে বেড়াচ্ছে।
কিন্তু বোতলের চিকিৎসা হবে কী করে? এই বয়সে ঘুমপাড়ানি গুলিতে তাকে বেহুঁশ করলে সে ঘুম ভাঙবে কিনা বনকর্তাদের সংশয় রয়েছে নিয়েই। আপাতত তা নিয়েই উপর মহলে শুরু হয়েছে চিঠি চালাচালি। বন দফতরের এক কর্তা আবার ধরিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘ঘুমপাড়ানি ওষুধের ডোজ নিয়ে কোনও স্থির সিদ্ধান্তে আসা খুব মুস্কিল। আমাদের কাছে যা আছে তা দিয়ে হাতি, বাইসন ঘুম পাড়ানো যায় ঠিকই, কিন্তু গন্ডারের ঘুম তো! ভাবছি অসম থেকে কোনও বিশেষজ্ঞ নিয়ে আসব কি না।’’
আসলে, গন্ডারের ব্যাপারে বিশেষ ঝুঁকি নিতে চান না উত্তরবঙ্গের বনকর্তারা। বন দফতরের অন্দরের খবর, গন্ডারের ক্ষতস্থান প্রাকৃতিক ভাবে সেরে ওঠার উপরেই জোর দেওয়া হয়, এটাই চেনা রীতি।
আপাতত তাই, দূর থেকে কুনকির পিঠে চড়ে বনকর্মীরা তার উপর নজরদারি চালাচ্ছেন। বড় মাপের পিচকারি দিয়ে বেটাডিন স্প্রে করারও চেষ্টা হচ্ছে ক্ষতস্থানে। প্রাণী চিকিত্সক দীপক বার বলেন, ‘‘সমস্যা হল ক্ষত খোলা রাখলে ঘা পচে যেতে পারে। সে জন্যই যতটা সম্ভব বেটাডিন দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।’’
সে চিকিৎসায় নিঃসঙ্গ বোতল বাঁচবে তো?