শিলিগুড়ি থেকে গ্রেফতার হন অভিযুক্ত। —নিজস্ব চিত্র।
প্রচুর মাদক এবং নগদ টাকা-সহ এক অভিযুক্তকে পাকড়াও করেছিল পুলিশ। তাঁর সঙ্গে বড় কোনও চক্র জড়িত আছে, এই সন্দেহে চলছিল টানা জিজ্ঞাসাবাদ। কিন্তু যে তথ্য মিল তাতে ঝটকা খেলেন তদন্তকারীরা। এ যে পুলিশকর্মীর নাম উঠে এসেছে! ঘটনাস্থল শিলিগুড়ি।
শিলিগুড়ি সংলগ্ন কাওয়াখালি এলাকা থেকে মুক্তি আলি নামে এক যুবককে ৬০০ গ্রাম মাদক এবং ৫ লক্ষ টাকা-সহ গ্রেফতার করে শিলিগুড়ি কমিশনারেটের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ (এসওজি)। এর পর ধৃত মুক্তিকে জেল হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই উঠে এসেছে পুলিশকর্মী মোবারক আলির নাম। এতেই শোরগোল পড়েছে শিলিগুড়ির পুলিশ মহলে। পুলিশ সূত্রে খবর, মোবারক আলি নামে যাঁর নাম উঠে এসেছে, তিনি কারাকর্মী। শিলিগুড়ি বিশেষ সংশোধনাগারের হয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে কারা বিভাগের দায়িত্ব সামলান তিনি। ওই পুলিশকর্মীর বাড়ি শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের নকশালবাড়িতে। মাস ছয়েক ধরে কারা বিভাগের কাজে কর্মরত তিনি। অভিযোগের প্রেক্ষিতে গ্রেফতার করা হয়েছে ওই পুলিশকর্মীকে।
ধৃতকে শনিবার নিজেদের হেজাফতে নিয়েছে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের এনজেপি থানার পুলিশ। রবিবার তাঁকে আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করে ৯ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। এ নিয়ে শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার অখিলেশ চতুর্বেদী বলেন, ‘‘মোবারক আলিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনায় আর কেউ জড়িত রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ শিলিগুড়ি বিশেষ সংশোধনাগারের সুপার দীপক কার্জি এই বিষয়ে বলেন, ‘‘পুলিশের তরফে একটা অভিযোগ মিলেছে। সেই মতো বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। সেখান থেকে যেমন নির্দেশ আসবে, সেই মতো পদক্ষেপ করা হবে।’’
পুলিশের একটি সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, মোবারক কারাকর্মী হওয়ার সুবাদে নিজের প্রভাব খাটিয়ে অনেক দিন ধরেই মাদকের কারবার করছিলেন। এমনকি, মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসার জন্য আসা আসামীদের রিপোর্ট প্রভাব খাটিয়ে পরিবর্তন করারও অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। এ ছাড়া তিনি কারাগারে থাকা বন্দিদের কাছে দ্বিগুণ দামে মাদক চালান করতেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। এক জন কারাকর্মী কী ভাবে মাদকের কারবার করছিলেন এবং বন্দিদের মধ্যে দিনের পর দিন মাদক সরবরাহ করছিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে কারা দফতরের নিরাপত্তা এবং কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়েও।