পূর্ব বর্ধমান থেকে আনা এই হাতিটিই ‘নিরুদ্দেশ’। নিজস্ব চিত্র।
ঝাড়গ্রাম থেকে নিয়ে আসা ‘দুষ্টু’ দাঁতাল আগেই ব্রহ্মপুত্র নদ পেরিয়ে মেঘালয়ে চলে গিয়েছে। আরএ বার পূর্ব বর্ধমান থেকে আনা হাতিটিও বক্সার জঙ্গলে ‘নিরুদ্দেশ’ হয়ে গেল।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত প্রায় পাঁচ দিন ধরে এইহাতিটির কোনও খোঁজ মিলছে না। আগের দাঁতালটির মতো এটিও মেঘালয়ের দিকে চলে গেল কি না, সে ব্যাপারে অবশ্য নিশ্চিত ননবন দফতরের কর্তারা। তবে বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে,শেষ বার বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের পূর্ব বিভাগের জঙ্গলে হাতিটিকে দেখা গিয়েছিল। আগের দাঁতালটি ওই এলাকা দিয়েই অসম হয়ে মেঘালয়ে ঢুকেছিল।
যদিও বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ক্ষেত্র অধিকর্তা অপূর্ব সেন বলেন, “পূর্ব বর্ধমান থেকে আনা হাতিটিকে রেডিয়ো কলার পরিয়ে জঙ্গলে ছাড়া হয়েছে। যে রেডিয়ো কলার মূলত জিএসএম সিস্টেমের উপরে নির্ভরশীল। কিন্তু গত চার-পাঁচ দিন ধরে ওই সিস্টেমে হাতিটিকে ট্র্যাক করা যাচ্ছে না।” বক্সার বন কর্তারা জানিয়েছেন, এর অর্থএমন নয় যে, আগের দাঁতালটির মতো এই হাতিটিও অসম হয়ে ব্রহ্মপুত্র পেরিয়ে মেঘালয়ে চলে গিয়েছে। অনেক সময় গভীরজঙ্গলে থাকার কারণে নেটওয়ার্কের অভাবে রেডিয়ো কলারের সাহায্যে হাতি বা অন্য বন্যপ্রাণীর খোঁজ না-ও মিলতে পারে। রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) দেবল রায় বলেন, “এই মুহূর্তেহাতিটি জিএসএম নেটওয়ার্কের মধ্যে নেই। জিএসএম নেটওয়ার্কের মধ্যে এলে, হাতিটি কোথায় রয়েছে, তা বলা যাবে।”
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর ঝাড়গ্রাম থেকে প্রথম একটি দাঁতালকে বক্সার জঙ্গলে নিয়ে আসা হয়। সেটিকেও রেডিয়ো কলার পরানো হয়েছিল। কিছু দিন পরে দেখা যায়, ওই হাতিটি অসম হয়ে ব্রহ্মপুত্র পেরিয়ে মেঘালয়ে চলে গিয়েছে। এরই মধ্যে গত ১৩ফেব্রুয়ারি পূর্ব বর্ধমানথেকে ধরে এনে আরও একটি হাতিকে বক্সার জঙ্গলে ছাড়া হয়। এ বার দেখা যাচ্ছে, সেটিরও হদিস নেই। প্রশ্ন উঠছে, তবে কি হাতি পুনর্বাসনের জন্য বক্সার জঙ্গল উপযুক্ত নয়! বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পেরবন কর্তারা এ নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলতে চাননি।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বন দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বক্সার জঙ্গলে সব সময়েআড়াইশো থেকে তিনশো হাতি থাকে। এই হাতিগুলি যে শুধু বক্সার জঙ্গলের তা বলা যাবে না। বক্সার জঙ্গল থেকে যেমন প্রায় প্রতিদিন কোনও না কোনও অন্য জঙ্গলে য়ায়, তেমনই অন্য জঙ্গল থেকেওহাতিরা বক্সায় আসে। তাই বক্সা হাতিদের জন্য উপযুক্ত নয়, সেটা বলা যাবে না।’’