মৃত রহিম শেখ।
পাম্প ‘চোর’ সন্দেহে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল প্রতিবেশীদের একাংশের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে রায়গঞ্জ থানার গৌরী গ্রাম পঞ্চায়েতের ইটাল এলাকায়। পুলিশ জানায়, নিহতের নাম রহিম শেখ (৩৮)। এ দিন বাড়ি থেকে ৩০০ মিটার দূরে জমি থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় রহিমের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। মৃতের স্ত্রী খালেকা খাতুন ১৪ জন প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে এ দিন দুপুরে রায়গঞ্জ থানায় গণপিটুনি ও খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। রায়গঞ্জ মেডিক্যালের মর্গে ওই ব্যক্তির মৃতদেহের ময়না-তদন্ত করিয়েছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, ঘটনায় ছ’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযুক্তদের ধরপাকড় শুরু করতেই বাকি অভিযুক্তেরা পালিয়ে গিয়েছে। তবে মূল অভিযুক্ত প্রতিবেশীর পরিবারের দাবি তাঁরা রহিমকে পিটিয়ে মারেননি। তাঁদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাঁরা আইনের পথে লড়বেন।
রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার সুপার মহম্মদ সানা আখতার জানিয়েছেন, জমিতে জলসেচ দেওয়ার পাম্প ‘চোর’ সন্দেহে এক দল ব্যক্তি রহিমকে পিটিয়ে খুন করেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে। তিনি বলেন, “ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ছ’জনকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।”
রহিমের স্ত্রী খালেকা ঘরের কাজ সামলান। তাঁদের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। খালেকার দাবি, রহিমের জমির পাশে তাঁদের প্রতিবেশী এক ব্যক্তির জমি রয়েছে। সে জমিতে থাকা পাম্পঘরের একাংশ রহিমের জমিতে রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে রহিম তাঁর জমি থেকে ওই ঘর সরিয়ে নিতে সেই প্রতিবেশীকে বলছিলেন। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রহিম ও তাঁর আত্মীয়দের সঙ্গে ওই প্রতিবেশীর গোলমাল ছিল বলে স্থানীয়রা জানান।
এ দিন গণপিটুনির একটি ভিডিয়ো (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তাতে এক দল লোককে বাঁশ ও লাঠি দিয়ে রহিমকে জমিতে ফেলে পিটিয়ে মারতে দেখা গিয়েছে বলে নিহতের পরিবারের দাবি। খালেকা বলেন, “চোর অপবাদ দিয়ে কিছু লোক আমার স্বামীর হাত ও পা বেঁধে বাঁশ, লাঠি ও ধারাল অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে খুন করেছে।” রহিমের কাকা রুস্তম আলির দাবি, দু’সপ্তাহ আগে ওই প্রতিবেশীর জমি থেকে রহিম পাম্প চুরির চেষ্টা করেন বলে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হয়েছিল।