ময়না-তদন্তে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে দেহ। নিজস্ব চিত্র
বাড়ির উঠোনে পড়ে যুবতীর দেহ। উঠোনের এক কোণে পড়ে রয়েছে কাটা মাথা। শুক্রবার সাতসকালে ভয়ঙ্কর এই দৃশ্য দেখে শিউরে উঠলেন মালদহের হবিবপুরের নিরোইল গ্রামের বাসিন্দারা। ঘটনায় মৃতের স্বামীকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন তাঁরা। অভিযোগ, যুবতীকে নৃশংস ভাবে খুন করেছেন তাঁর স্বামী। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ধারালো হাঁসুয়া উদ্ধার করেছে। পারিবারিক বিবাদের কারণে খুন না কি, অন্য কোনও বিষয় রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছেন পুলিশের তদন্তকারী কর্তারা।
মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব বলেন, “খুনের কারণ জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। ধৃতকে আদালতে পেশ করে হেফাজতে নেওয়া হবে।”
পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের নাম সাবিত্রী রায় (২৮)। তাঁর স্বামী বচন টুডু শ্রমিকের কাজ করেন। তিনি দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন থানার করদহ দিঘি গ্রামের বাসিন্দা। তবে বিয়ের পর থেকে হবিবপুরের মঙ্গলপুরা গ্রাম পঞ্চায়েতের নিরোইল গ্রামে শ্বশুরবাড়িতেই স্ত্রীর সঙ্গে থাকতেন তিনি। দু’বছর আগে তাঁদের বিয়ে হয়। দম্পতির কোনও সন্তান নেই। স্থানীয়দের দাবি, সাবিত্রীর বাবা, মা দু’জনেই মারা গিয়েছেন। দাদা, বৌদি অন্যত্র থাকেন। স্বামী, স্ত্রী-ই বাড়িতে থাকতেন। বচন খুব নেশা করতেন বলে দাবি গ্রামবাসীদের একাংশের। প্রতিবেশি মণি রায়ের দাবি, হত্যাকাণ্ড কখন ঘটেছে, তা তাঁরা টের পাননি। কোনও চিৎকার শোনা যায়নি সাবিত্রীদের বাড়ি থেকে। তাঁর দাবি, কিছু সময়ে ঝগড়া হত সাবিত্রী-বচনের। তবে তা খুব বড় আকারে পৌঁছতে দেখেননি।
এ দিন সকাল ৬টা নাগাদ বাড়ির উঠোনে সাবিত্রীর দেহ এবং কাটা মাথা পড়ে থাকতে দেখেন গ্রামবাসীরা। সে দৃশ্য দেখে, গ্রামবাসীরা বচনকে বাড়িতে আটকে রাখেন। পুলিশ গিয়ে বচনকে গ্রেফতার করে। পুলিশ জানিয়েছে, শোওয়ার ঘরের বিছানাতেও রক্ত রয়েছে। দেহ ও মাথা বাড়ির উঠোন থেকে উদ্ধার হয়েছে। দেহটি উদ্ধার করে ময়না-তদন্তের জন্য মালদহ মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে। আজ, শনিবার ধৃত বচনকে মালদহ জেলা আদালতে পেশ করা হবে।
গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য বিজেপির সুজয় মার্ডি বলেন, “বচন মদ্য পান করে অনেক সময় নেশাগ্রস্ত থাকতেন বলে শুনেছি। তবে এমন ঘটনা ঘটবে কেউ কল্পনা করতে পারেননি।”