—ফাইল ছবি
আর কলকাতায় ছুটতে হবে না। বন্যপ্রাণীদের দেহের নমুনা পরীক্ষা এবার উত্তরবঙ্গেই হবে। এজন্য উত্তরবঙ্গে একটি পরীক্ষাগার তৈরির সিদ্ধান্ত নিল বন দফতর।
বন দফতর সূত্রের খবর, জলদাপাড়ায় চারদিনে পাঁচটি গন্ডারের মৃত্যুর প্রেক্ষিতে সোমবার কলকাতায় দফতরের শীর্ষকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন রাজ্যের বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠক শেষে উত্তরবঙ্গে নিজেদের উদ্যোগে একটি পরীক্ষাকেন্দ্র তৈরির সিদ্ধান্তের কথা জানান মন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, আপাতত মাদারিহাটেই এই কেন্দ্রটি তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর দফতরের।
এ দিনের বৈঠকে আরও সিদ্ধান্ত হয়েছে, কলকাতার অ্যানিম্যাল রিসোর্সেস ডেভেলপমেন্ট (এআরডি) দফতর থেকে কবে রিপোর্ট আসবে তার অপেক্ষায় না থেকে পরপর গন্ডার মৃত্যুর কারণ জানতে জলদাপাড়ায় বিশেষ কিছু কিট পাঠানো হবে। যাতে সেই কিটের মাধ্যমে পরীক্ষা করে গন্ডারগুলির মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পান বনকর্তারা এবং সেই অনুযায়ী, উত্তরের এই জঙ্গলে গন্ডার ও বাকি বন্যপ্রাণীদের রক্ষায় যাতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
শনিবার সন্ধ্যায় এআরডি দফতর থেকে পাঁচটি গন্ডারের মৃত্যুর কারণ অ্যানথ্রাক্স নয় বলে বনকর্তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়। এরপর খোদ বনকর্তাদের একাংশ এআরডি-র ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এক বনকর্তা তো শনিবারই বলেই ফেলেন যে, ‘‘গন্ডারদের মৃত্যুর কারণ কী সেটা আমরা এআরডি-র তরফে জানতে চেয়েছিলাম। অ্যানথ্রাক্সের কারণে সেগুলির মৃত্যু হয়নি তা উল্লেখ করে মৃত্যুর আসল কারণটাই তাঁরা জানালেন না।’’ এই পরিস্থিতিতেই জঙ্গলে বন্যপ্রাণীদের সুরক্ষার প্রশ্নে তাঁদের দেহের নমুনা পরীক্ষার জন্য এখানে একটি পরীক্ষাকেন্দ্র তৈরির দাবি ওঠে।
এ দিন বৈঠক শেষে রাজ্যের বনমন্ত্রী রাজীব বলেন, ‘‘মাদারিহাটে একটি পশু চিকিৎসালয় গড়া হবে। সেখানেই আমাদের দফতরের নিজেদের উদ্যোগে বন্যপ্রাণীদের দেহের নমুনা পরীক্ষার জন্য একটি পরীক্ষাগার গড়া হবে। সেইসঙ্গে আমরা কিছু কিট জলদাপাড়ায় পাঠাচ্ছি। যাতে করে সেগুলির মাধ্যমে পরীক্ষা করে দেখে পাঁচটি গন্ডারের মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কিছু ধারণা পাওয়া যায়।’’
দফতরের এই সিদ্ধান্তে খুশি বন কর্তাদের থেকে শুরু করে পরিবেশ প্রেমীরাও। পরিবেশ প্রেমী সংগঠন ন্যাফের কো-অর্ডিনেটর অনিমেষ বসু বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গে বন্যপ্রাণীদের দেহের নমুনা পরীক্ষার জন্য একটি ল্যাবরেটরি খুবই প্রয়োজন। কারণ বেলগাছিয়ার ল্যাবরেটরির উপর প্রচন্ড চাপ থাকে। ফলে সেখান থেকে রিপোর্ট আসতে দেরি হয়ে যায়।’’