—প্রতীকী চিত্র।
এ বছর উচ্চ মাধ্যমিকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের নামে উত্তর দিনাজপুর জেলায় প্রতারণা চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ। চক্রের সদস্যেরা জেলার বেশ কিছু হাই স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের হোয়্যাটসঅ্যাপে উচ্চ মাধ্যমিকের নানা বিষয়ের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা দাবি করছেন। এ নিয়ে শনিবার রাতে রায়গঞ্জের একটি হাই স্কুলের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী এক দল ছাত্রী রায়গঞ্জ সাইবার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্তে নামেন সাইবার ক্রাইম বিশেষজ্ঞ পুলিশ অফিসাররা।
ওই প্রতারণাচক্র জেলার রায়গঞ্জ ও ইসলামপুর মহকুমার পরীক্ষার্থীদের হোয়্যাটসঅ্যাপে বিভিন্ন বিষয়ের ভুয়ো প্রশ্নপত্রের নমুনা ছবি ও ভিডিয়ো পাঠিয়ে তাঁদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছে। পরীক্ষার্থীদের একাংশ এই বিষয়ে উৎসাহ দেখাতেই প্রতারণা চক্রের সদস্যেরা প্রশ্নপত্রের নমুনা ছবি ও ভিডিয়ো মুছে তাঁদের কাছ থেকে অনলাইন পেমেন্ট পদ্ধতিতে এক একটি বিষয়ের প্রশ্নবাবদ সাত-আট হাজার টাকা করে দাবি করছে বলে অভিযোগ। রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার সাইবার ক্রাইম বিশেষজ্ঞ এক আধিকারিক বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে এ পর্যন্ত উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার প্রমাণ মেলেনি। একটি প্রতারণা চক্র একক ভাবে ও হোয়্যাটসঅ্যাপ গ্রুপ খুলে কিছু পরীক্ষার্থীকে ভুয়ো প্রশ্নপত্র দেখিয়ে উচ্চ মাধ্যমিকের বিভিন্ন বিষয়ের প্রশ্নপত্র দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা দাবি করছে। দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।”
অভিযোগকারী ছাত্রীদের দাবি, কয়েক দিন ধরে তাঁদের ও রায়গঞ্জের বেশ কিছু পরীক্ষার্থীর হোয়াটসঅ্যাপে একটি প্রতিষ্ঠানের নাম করে উচ্চ মাধ্যমিকের এই বছরের বাংলা ও ইংরেজি প্রশ্নপত্রের প্রথম পাতার ছবি ও ভিডিয়ো পাঠানো হয়। প্রশ্নপত্রে ‘কোড’ রয়েছে বলে দাবি করে ধরা পড়ার আশঙ্কার কথা জানিয়ে তাঁদের হোয়্যাটসঅ্যাপে খাতার কাগজে লেখা বিভিন্ন বিষয়ের কিছু প্রশ্নের ছবি ও ভিডিয়ো পাঠানো হয়। প্রশ্নফাঁসের বিষয়টি নিশ্চিত হতে প্রেরকের হোয়্যাটসঅ্যাপে কয়েক জন ছাত্রী ইংরেজির প্রশ্নপত্র চান। এক ছাত্রীর কথায়, “এর পরেই হোয়্যাটসঅ্যাপে আমাদের কাছে এক একটি বিষয়ের প্রশ্নপত্রের দাম বাবদ আট হাজার টাকা চেয়ে অনলাইন পেমেন্ট-এর কিউআর কোড পাঠানো হয়। নমুনা প্রশ্নপত্রে ও ভিডিয়ো মুছে দেওয়া হয়।” ছাত্রীদের দাবি, প্রতারণাচক্রের বিষয়টি আঁচ করতে পেরে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করার জন্য তাঁদের মধ্যে কয়েক জন প্রতারকদের হোয়্যাটসঅ্যাপে পাঠানো ভুয়ো প্রশ্নপত্র ও তাঁদের লেখা কথোকপথন তাঁরা অন্য মোবাইলে রেকর্ডিং করে রাখেন। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ নিযুক্ত পরীক্ষা পরিচালন কমিটির জেলা আহ্বায়ক সুব্রত সাহা বলেন, “উচ্চ মাধ্যমিকে প্রশ্নফাঁসের কোনও ঘটনা ঘটেনি। প্রতারকেরা ছাত্রীদের ভুয়ো প্রশ্নপত্র দিয়ে টাকা হাতানোর কৌশল নিয়েছে। সংসদের তরফে পুলিশকে জানানো হয়েছে।”