ganesh chaturthi

মন্ত্র পড়ে পুরোহিতের দায়িত্ব পালন, প্রথা ভেঙে গণেশ পুজো শিলিগুড়ির চিকিৎসক তনুশ্রীর

তনুশ্রীর কথায়, ‘‘ এক জন মেয়ে যদি মহাকাশে যেতে পারে, তা হলে একটা পুজো কেন করতে পারবে না? মন থেকে চাইলেই করতে পারা যায়। আর কোথাও এমন বাঁধা নিয়ম নেই যে, মহিলারা পুজো করতে পারবে না৷’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০২২ ২১:০৮
Share:

পুরোহিতের ভূমিকায় চিকিৎসক তনুশ্রী। নিজস্ব চিত্র।

বৃষ্টি কিছুটা বাধ সাজলেও গণেশ চতুর্থীতে মেতেছে শিলিগুড়ি শহর। ছোট-বড় মিলিয়ে গোটা শহরে প্রায় শতাধিক পুজো হচ্ছে শিলিগুড়িতে। বড় পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম কলেজ পাড়া, বিধাননগর ব্যবসায়ী সমিতি এবং হাতিমোড়ের নাইট আউল অ্যাসোসিয়েশনের পুজো। প্রথম বছরের পুজোতেই মহিলা পুরোহিত ও নাসিকের ঢোলে শহরকে মাতানোর পরিকল্পনা নিয়েছেন নাইট আউল অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা।

Advertisement

কর্মকর্তাদের কথায় শুরুটা যে খুব একটা পরিকল্পনা মাফিক হয়েছে তেমনটা নয়। পার্শ্ববর্তী এলাকার বেশ কয়েকজন যুবক হাতিমোড়ে আড্ডা মারতেন। এলাকাবাসী মজার ছলে তাঁদের নাম দিয়েছিলেন নাইট আউল। সেই কয়েকজন যুবকই অ্যাসোসিয়েশন তৈরি করে গণেশ পুজোর উদ্যোগ নেন। তবে পুজো করবেন কে? গণেশ উৎসবের পুরোহিতের খোঁজ মেলে তনুশ্রী চক্রবর্তীর। পেশায় চিকিৎসক তনুশ্রী রাজিও হয়ে যান নাইট আউল অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের অনুরোধে পুজো করতে।

বুধবার পুজোমণ্ডপে প্রথা ভেঙে পুরোহিতের দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেল পেশায় চিকিৎসক তনুশ্রীকে। তিনি বলেন, ‘‘এটা যেমন নাইট আউল অ্যাসোসিয়েশনের প্রথম পুজো, তেমনই আমারও প্রথম বড় পুজো। এর আগে এত বড় পুজো আমি করিনি। তবে অনেক দিন ধরেই আমি পুজো করি ভালোবেসে। আমার সন্তানদের যেমন আমি স্নেহ করি, যত্ন করি তেমনই পুজোটাও আমি সে ভাবে করি।’’

Advertisement

পুজো করে প্রথা ভাঙতে কেমন লাগল? তনুশ্রীর জবাব, ‘‘ এক জন মেয়ে যদি মহাকাশে যেতে পারে, তা হলে একটা পুজো কেন করতে পারবে না? এটা মনের বিষয়। মন থেকে চাইলেই করতে পারা যায়। আর কোথাও এমন বাঁধা নিয়ম নেই যে, মহিলারা পুজো করতে পারবে না। সমাজের মহিলাদের কাছে আমার একটাই বার্তা চাইলে সব বাধা বিঘ্ন অতিক্রম করা যায়৷ পুরুষদের পাশাপাশি মহিলারাও একে পেশা হিসেবে গ্রহণ করতে পারে।’’

অন্য দিকে, নাইট আউল অ্যাসোসিয়েশনেরকোষাধ্যক্ষ শঙ্কর দাস বলেন, ‘‘আমাদের বাড়িতে আমরা দেখি মা, কাকিমা, জেঠিমা, পুজো করেন। এ বার বড় পুজোর ক্ষেত্রে যে রীতি রয়েছে সেটা আমরা ভাঙতে চাইছি। শহরের যে বড় পুজোগুলো হয়, সেগুলি মহিলারাও করতে পারেন এবং তাঁদেরও সেই কাজে অংশগ্রহণ করার সুযোগ দেওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি।’’ সেই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘অনেক পরিবারের মহিলারাই পুজো করতে পারেন। আমরা যদি তাঁদের সুযোগ করে দিই, তা হলে তাঁদেরও বিকল্প উপার্জনের পথ তৈরি হয়। বিসর্জনকে কেন্দ্র করেও আমাদের অন্য রকম পরিকল্পনা রয়েছে। গণেশ পুজো আসলে মহারাষ্ট্রের প্রধান পুজো। সেখানে যে নিয়মে বাজনার সঙ্গে বিসর্জন হয়, আমাদের এ বার সেই পরিকল্পনাই রয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement