প্রতীকী ছবি।
তিনি কোভিড যোদ্ধা, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের চিকিৎসক। এ বারে তাঁকে হেনস্থা করার অভিযোগ উঠল যে আবাসনে তিনি থাকেন, সেখানকার পরিচালন কমিটির সদস্যদের একাংশের বিরুদ্ধে। মেডিক্যাল কলেজ লাগোয়া ওই আবাসন কমপ্লেক্সে চিকিৎসকদের অনেকেই থাকেন। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের চিকিৎসকের ফ্ল্যাটের কাছে থাকা অপর একটি ফ্ল্যাটের এক ব্যক্তি (তিনিও চিকিৎসক, নার্সিংহোমের) করোনা আক্রান্ত হন। তিনি মাটিগাড়ার একটি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। অথচ তাঁর পরিবারের লোক এবং পরিচিতেরা তাঁদের ফ্ল্যাটে এসে করিডরে অবাধে ঘোরাফেরা করছে দেখে আপত্তি তোলেন অভিযোগকারীর স্ত্রী। এ ভাবে তাঁদের বাইরে ঘুরতেও নিষেধ করেন তিনি। অভিযোগ, তার জেরে গত রবিবার আবাসন পরিচালন কমিটির কর্মকর্তা সঞ্জয় মিশ্র লোকজন নিয়ে ওই ফ্ল্যাটে পৌঁছে চিকিৎসক এবং তাঁর স্ত্রীকে গালিগালাজ করেন, দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। চিকিৎসককে হেনস্থা করা নিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে দেখে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের চিকিৎসকদের কয়েকজন পুলিশকে জানান। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়।
আবাসনের ব্লক প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত কমিটির সভাপতি সঞ্জয় মিশ্র অবশ্য দাবি করেন, ‘‘অভিযোগ একেবারেই ঠিক নয়। হেনস্থা করা তো হয়নি। উল্টে ওই চিকিৎসক ও তাঁর স্ত্রী অন্যদের হেনস্থা করছেন। করোনা আক্রান্ত পরিবারকে কেউ সাহায্য করতে সেখানে গেলে ওই চিকিৎসক এবং তাঁর স্ত্রী তাদের নানা কথা বলছেন। তাতে তাঁরা বিপাকে পড়ছেন।’’ তাঁর দাবি, ‘‘তা নিয়ে বলতে গেলে উল্টে তিনি চোটপাট করেন। মোবাইলে ভিডিও তোলেন। অথচ তিনি চিকিৎসক হয়ে মানবিক ধর্ম পালন করছেন না, সে কথাই বলা হয়েছে।’’ কোনও পক্ষই অবশ্য পুলিশে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি। মাটিগাড়া পুলিশ জানিয়েছে, চিকিৎসককে হেনস্থা করা হচ্ছে— এমন অভিযোগ পেয়ে পুলিশ যায়। দুই পক্ষের কথা শোনার পর তাদের বোঝানো হয়েছে। তাতে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের ওই চিকিৎসকের অভিযোগ, ‘‘এ ভাবে ফ্ল্যাটে এসে গালিগালাজ করা, গুন্ডামি করা মেনে নেওয়া যায় না। একই করিডরে পাশের ফ্ল্যাটে এক চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত। তাঁর বাড়ির লোকেদের অনুরোধ করার মতো করেই বলা হয়েছিল, বাড়ির ভিতরে থাকুন। নিয়ম মেনেই তা করতে বলা হয়েছে। তা নিয়ে আপত্তি তুলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।’’ ওই চিকিৎসকের পক্ষ নিয়ে আবাসিকদের কয়েকজন জানান, কোনও সমস্যা হলে তা আলোচনা করলেই মিটে যায়। তা নিয়ে গা জোয়ারি করা, দাদাগিরি করা ঠিক নয়। তা ছাড়া আবাসিকদের কমিটির কর্মকর্তা নিজেও সম্প্রতি করোনা আক্রান্ত হন। রবিবার ১৭-১৮ দিনের মাথায় তিনিও ঘুরছেন দেখে তা নিয়েও আপত্তি জানান অনেকে।
অপর পক্ষের পাল্টা অভিযোগ, করোনা আক্রান্ত চিকিৎসকের স্ত্রী দুই নাবালক সন্তানকে নিয়ে থাকেন। তার মধ্যে রবিবার মহিলা সিটি স্ক্যান করাতে এবং চিকিৎসককে দেখাতে গিয়েছিলেন। বাচ্চাদের দেখভাল করতে পরিচিত ব্যক্তি এসেছিলেন। তিনি করিডরে দাঁড়িয়ে থাকলে তখন অভিযোগকারী চিকিৎসকের স্ত্রী তা নিয়ে আপত্তি তোলেন।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২)