ঘরে ঢুকেছে ভালুক। —নিজস্ব চিত্র।
জলপাইগুড়ির পর এ বার মালবাজার শহরে একটি বাড়িতে ঢুকল ভালুক। বৃহস্পতিবার সকালে শহরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডে একটি বাড়িতে ঢুকে পড়ে ভালুকটি। পরে ভালুকটিকে ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ে উদ্ধার করেন বনকর্মীরা।
মালবাজার শহরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বিশ্বনাথ পোদ্দার বলেন, ‘‘সকালে দরজা খোলার পর ভালুকটাকে দেখতে পাই। প্রথমে জন্তুটাকে দেখে বুঝতে পারিনি। ভেবেছিলাম শূকর। তবে পরে পায়ের নখ দেখে বুঝতে পারি ওটা ভালুকের বাচ্চা। আমরা সকলেই খুব আতঙ্কে আছি।’’ আতঙ্কের ছাপ ১১ নম্বর ওয়ার্ডের অন্যান্য বাসিন্দার চোখেমুখেও।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান পরিবেশপ্রেমীরা। তাঁদের সূত্রে জানা গিয়েছে, ভালুকটি পূর্ণবয়স্ক নয়। শিশু। তাঁদের মতে, এমন অবস্থায় ভালুক কখনও একা ঘোরে না। ওই ভালুকটির সঙ্গে তার সঙ্গীরাও আছে বলে মনে করছেন পরিবেশপ্রেমীরা।
পরিবেশপ্রেমীরা যেমন আসেন, তেমনই খবর পেয়ে ঘটনাস্থল ঘিরে ফেলেন বনকর্মীরা। তাঁরা খাঁচা এবং জালে নিয়ে এসে ভালুকের বাচ্চাটিকে উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছেন। ভালুকটিকে ধরতে ঘুমের ইঞ্জেকশন প্রয়োগ করা হবে কি না, তা নিয়ে প্রাথমিক ভাবে খানিক মতান্তর দেখা দেয়। কারণ, অনেকের মতে, ভালুকটির যা বয়স তাতে ঘুমের ইঞ্জেকশনে ওষুধের মাত্রা সামান্য বেশি হলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
প্রাথমিক ভাবে বনকর্মীরা খাঁচা এবং জালের মাধ্যমে ভালুকটিকে ধরার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তা বাড়িটির আশপাশে উৎসাহীদের ভিড় বাড়তে শুরু করেছিল। এর পর ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ে ভালুকটিকে কাবু করা হয়। তাকে খাঁচাবন্দি করে নিয়ে যাওয়া হয় নেওড়া ভ্যালি ন্যাশনাল পার্কে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে জঙ্গলে ছাড়া হবে বলে বনদফতর সূত্রে খবর। ভালুক উদ্ধার হওয়ায় কিছুটা স্বস্তিতে মালবাজারবাসী। তবে এলাকার আরও ভালুক শাবক রয়েছে বলে আশঙ্কা অনেকের।
দিন কয়েক আগেই জলপাইগুড়ি শহরে ভালুক ঢোকার খবর মিলেছিল। জেলাশাসকের বাংলোর সামনের সিসি ক্যামেরায় ভালুকের ছবিও ধরা পড়ে। তবে ভালুকটির কোনও সন্ধান মেলেনি। এর আগে ভালুকের হামলায় এক জন নিহত হন মালবাজারের মেটেলিতে। পরে ভালুকটিকে পিটিয়ে হত্যা করে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। সম্প্রতি নাগরাকাটায় একটি ভালুককে উদ্ধার করেছেন বনকর্মীরা। আলিপুরদুয়ারেও একটি ভালুককে উদ্ধার করা হয়েছে।