Child Drowned in flood

বানভাসি গ্রাম, জলে ডুবে মৃত্যু শিশুর

তুফানগঞ্জ ১ ব্লকের বালাভূত গ্রাম পঞ্চায়েতের কালজানি, গদাধর, রায়ডাক নদীর জল বাড়ায় প্লাবিত হয় দক্ষিন বালাভূত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪ ০৯:০২
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

দিন কয়েক ধরে সমতল ও পাহাড়ে চলছে লাগাতার বৃষ্টি। আর তার জেরে কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারের একাধিক নদীতে জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। তুফানগঞ্জে রবিবার বন্যার জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে এক শিশুর। পুলিশ জানায়, মৃত শিশুর নাম আবিদা পারভিন (৮)। পুলিশ দেহটি উদ্ধার করেছে।

Advertisement

কোচবিহারে তোর্সা, মানসাই, রায়ডাক নদীর জলে অন্তত পক্ষে দশটি গ্রাম জলবন্দি হয়ে পড়েছে। পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ সমস্যায় পড়েছেন। আলিপুরদুয়ারের ক্রান্তি এলাকাতেও দু’শোর বেশি
পরিবার জলবন্দি হয়ে পড়েছে। এই অবস্থার মধ্যে রবিবার দুপুরের পরে সূর্য দেখা গিয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, তিস্তা, মানসাই ও রায়ডাক নদীতে হলুদ সতর্কতা রয়েছে। একাধিক বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে আমরা রয়েছি।’’

তুফানগঞ্জ ১ ব্লকের বালাভূত গ্রাম পঞ্চায়েতের কালজানি, গদাধর, রায়ডাক নদীর জল বাড়ায় প্লাবিত হয় দক্ষিন বালাভূত। টানা বৃষ্টিতে জল বাড়ে রায়ডাক ১, গদাধর, তোর্সা কালজানি নদীতে। রায়ডাকের জল বাড়ায় তুফানগঞ্জ লাঙ্গলগ্রাম এলাকায় নদী ভাঙনে প্লাবিত হয়। প্রায় দেড়শো বাড়ি জলমগ্ন হয়। সেচ দফতর সূত্রে খবর, শনিবার রাত দশটা পর্যন্ত বাঁশের পাইলিং দিয়ে জল আটকানোর চেষ্টা করা হয়। তুফানগঞ্জ সেচ দফতরের আধিকারিক সৌরভ সেন বলেন, ‘‘রবিবার সকাল ছ’টায় রায়ডাক ১ নদীতে লাল সতর্কতা জারি করা হয়।’’ দিনহাটার মাতালহাটে বুড়া ধরলা নদীর জল বেড়ে কুটিবাড়ি, বাইশগুড়ি ও পাখিহাগা এই তিন গ্রাম ভেসে গিয়েছে। তিনটি গ্রামের প্রায় আড়াইশো মানুষ জলবন্দি হয়ে পড়েছে। মানসাইয়ের সুটুঙ্গা, ধরলা নদীতে জল কমলেও নতুন করে ভাঙন অব্যাহত।

Advertisement

আলিপুরদুয়ার শহরের বেশ কিছু নীচু এলাকায় এ দিনও জল জমে। যাদিও আলিপুরদুয়ারের পুরকর্তা প্রসেঞ্জিত কর বলেন, “শহরের কোথাও জল নেই। আলিপুরদুয়ারের নিকশি ব্যবস্থা এই মুহূর্তে যথেষ্ট উন্নত। ফলে অতিভারি বৃ্ষ্টি না হলে শহরে জল জমার কোনও অবকাশ নেই।” যদিও চেয়ারম্যানের এই দাবি মানেননি বিরোধীরা।

এরই মধ্যে এ দিন আলিপুরদুয়ার- ১ব্লকের শিসামারা নদী লাগোয়া এলাকা পরিদর্শনে যান আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ মনোজ টিগ্গা। টিগ্গার অভিযোগ,
“ওই নদীতে বাধ নির্মাণে কেন্দ্রীয় সরকার অর্থ বরাদ্দ করেছিল। অথচ, সেই টাকার দুর্নীতি হয়েছে। ফলে
অতি সম্প্রতি শিসামারা নদীর মাটির বাঁধ ভেঙে গিয়েছে। যার জেরে ওই নদীর জল এ বার লাগোয়া গ্রামেও প্রবেশ করতে পারে। যেটা মারাত্মক হতে পারে। ফলে বিষয়টি প্রশাসনের দেখা উচিত।”

আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল পাল্টা বলেন, “বিজেপি সাংসদ মনোজ টিগ্গা নিজের দায়িত্ব এড়িয়ে যাচ্ছেন। আমি বিধায়ক হিসাবে রাজ্যের তৎকালীন সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিককে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। তার পরে জরুরি ভিত্তিতে সেখানে বাঁধ নির্মাণ হয়। কিন্তু কেন্দ্রে যে হেতু মনোজ টিগ্গারা রয়েছেন, তখন তাঁরা অন্তত এই বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করুন। একটা কেন্দ্রীয় দলকে পরিদর্শনে পাঠান। এবং ডুয়ার্সের অস্তিত্ব রক্ষা করতে ব্যবস্থা নিন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement