ঢুকেছে মেসেজ কিন্তু ঢোকেনি টাকা। —ফাইল চিত্র।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফোনে ‘সরকারি মেসেজ’ পেয়ে বুধবার সকালে ১০০ দিনের বকেয়া মজুরির টাকা নিতে ব্যাঙ্কে যান দক্ষিণ জিনাজপুরের তপন ব্লকের লস্করহাটের জব-কার্ডধারী নারায়ণ বর্মণ, বালাপুরের সন্ন্যাসী ওরাওঁরা। বিকেল ৪টে পর্যন্ত ব্যাঙ্কে বসে থাকলেও, তাঁদের অ্যাকাউন্টে মজুরির টাকা ঢোকেনি বলে অভিযোগ। সংশ্লিষ্ট একটি শাখা ব্যাঙ্কের ম্যানেজার কিরণচন্দ্র সাহা বলেন, ‘‘বিকেল ৫টা অবধি ওই সংক্রান্ত নির্দেশ আসেনি।’’
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় বকেয়া মজুরি প্রাপক উপভোক্তার সংখ্যা প্রায় ৯৫ হাজার। প্রায় ৩৭ কোটি ৫ লক্ষ ৭১ হাজার ৮৩১ টাকা তাদের প্রাপ্য বলে সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে। এ দিন বিকেলে জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণ বলেন, ‘‘সরকারি ভাবে কোনও মেসেজ কী ভাবে এল, দেখা হচ্ছে। তবে বকেয়া মজুরির টাকা ব্যাঙ্কগুলিতে পাঠানো শুরু হয়েছে। ১ মার্চের মধ্যে উপভোক্তারা টাকা পেয়ে যাবেন।’’ প্রশাসন সূত্রে খবর, মঙ্গলবার থেকেই জেলা জুড়ে ব্যাঙ্কগুলিতে টাকা পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পাশাপাশি, অ্যাকাউন্ট যাচাই করতে উপভোক্তাদের অনুরোধ করে ফোনে ‘মেসেজ’ও আসছে।
দিনভর ব্যাঙ্কে থেকে অ্যাকাউন্ট যাচাই করে একাধিক শ্রমিক দেখেন, বকেয়া মজুরির টাকা ঢোকেনি। তাঁরা ক্ষুব্ধ হন। এ দিন বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক বাপি সরকার অভিযোগ করেন, ‘‘বালুরঘাটের ভাটপাড়া, চিঙ্গিশপুরের মতো পঞ্চায়েতে গত বোর্ডে ক্ষমতায় ছিল তৃণমূল। এ বার দলের প্রধানদের এড়িয়ে একাংশ অফিসকর্মীকে দিয়ে উপভোক্তার তালিকা তৈরি করা হয়েছে। ভাটপাড়াতে দু’বছর ১০০ দিনের কাজ হয়নি। তৃণমূল কর্মীদের উপভোক্তা সাজিয়ে টাকা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।’’ যদিও জেলা
তৃণমূল সভাপতি সুভাষ ভাওয়াল বলেন, ‘‘ভিত্তিহীন অভিযোগ। প্রশাসনের তরফে সমীক্ষা করে উপভোক্তার তালিকা তৈরি হয়েছে।’’ এক-দু’দিনে উপভোক্তার অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকে যাবে বলে তাঁর দাবি।
এ দিন তপনের লস্করহাট এলাকার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে একাধিক উপভোক্তা খালি হাতে ঘুরে যান। জব-কার্ডধারী শ্রমিক নারায়ণ বর্মণেরা বলেন, ‘‘দু’বছর ধরে ১০০ দিন প্রকল্পের টাকা পাইনি।’’ কত টাকা পাওয়া যাবে, ‘মেসেজ’-এ তার উল্লেখ নেই বলে উপভোক্তারা জানিয়েছেন।