—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
ঠিকা শ্রমিকের কাজে সিকিমে গিয়ে নিখোঁজ দক্ষিণ দিনাজপুরের সাত পরিযায়ী শ্রমিক। সকলেরই বাড়ি বালুরঘাটের ডাঙা বিজশ্রী এলাকার। পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই সাত জনই গত শুক্রবার বাড়ি থেকে এক ঠিকাদারের সঙ্গে সিকিমে কাজে গিয়েছিলেন। হ্রদ ফেটে বিপর্যয়ের পর থেকেই তাঁদের সঙ্গে আর যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। যার ফলে চরম উৎকন্ঠায় পরিবারের সদস্যরা। বার বার শ্রমিকদের মোবাইল নম্বরে ফোন করেও কোনও ভাবেই যোগাযোগ করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যেরা।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রশাসনের তরফে জানা গিয়েছে, জেলার কমপক্ষে ৩০ জন বাসিন্দা সিকিমে নানা কাজে গিয়েছেন, যাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না। পরে অবশ্য তাঁদের অনেকের সঙ্গেই যোগাযোগ করা সম্ভব হয়েছে। প্রশাসন মনে করছে, আরও অনেক মানুষই সিকিমে গিয়ে থাকতে পারেন। যাঁদের সঙ্গে এখনও যোগাযোগ করা যাচ্ছে না, তাঁদের সঙ্গে পুলিশ ও প্রশাসনের তরফে যোগাযোগ করার চেষ্টা চলছে।
বালুরঘাটের ডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের ডাঙা বিজশ্রী গ্রামের মৃদু পালের বাড়িতে স্ত্রী ও নাবালিকা কন্যা রয়েছে। পাশের বাড়ি মৃদুর দাদা সুধু পালও তাঁর স্ত্রীকে রেখে সিকিমে কাজে গিয়েছেন। তাঁরা গত শুক্রবার বাড়ি থেকে রওনা দিয়েছেন। বর্তমানে বাড়িতে শুধুমাত্র মহিলারাই রয়েছেন। মৃদুর স্ত্রী কৌশল্যা পাল বলেন, ‘‘কোন ঠিকাদারের সঙ্গে গিয়েছে, তা জানা নেই। এমনকি সিকিমের কোন জায়গায় কাজ করছে, তাও জানি না। যে দিন থেকে সিকিমের বন্যার খবর পেয়েছি, সে দিন থেকেই যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি। কিন্তু কিছুতেই যোগাযোগ সম্ভব হচ্ছে না। আমরা খুব চিন্তায় রয়েছি।’’ ওই গ্রামেরই বাসিন্দা ষষ্ঠী পাহান বলেন, ‘‘আমাদের গ্রামের মোট সাত জন এক ঠিকাদারের সঙ্গে সিকিমে কাজে গিয়েছেন। কারওরই খোঁজ পাচ্ছি না। আমাদের গ্রামের সবাই চিন্তায় রয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বালুরঘাট ব্লকের ডাঙার পালপাড়ার নিখোঁজ ওই সাত পরিযায়ী শ্রমিকদের নাম মৃদু পাল, সুধু পাল, দুলাল পাল, বেলাই পাল, সামরা পাল, তজু পাল ও নবীন পাল। এ ছাড়াও বালুরঘাট ব্লকের ভাটপাড়া, চিঙ্গিসপুরের আরও চার শ্রমিক অন্যত্র কাজে গিয়েছেন। তাঁদের খোঁজ মিলেছে। জেলা জুড়ে প্রায় ৩০ জনের রিপোর্ট পাওয়া গিয়েছে। তাঁদের সঙ্গে প্রশাসনের তরফে যোগাযোগ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণা শনিবার বিকেলে বলেন, ‘‘জেলার ৩০ জনের খবর পেয়েছি, যাঁরা সিকিমে কাজে গিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগের সঙ্গেই যোগাযোগ করা গিয়েছে। তাঁরা ভাল রয়েছেন। অনেকের সঙ্গেই যোগাযোগ করা সম্ভব হয়েছে। কুশমন্ডির বাসিন্দা এক জনের সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি। তবে চেষ্টা চলছে। প্রশাসনের তরফে যোগাযোগ করার চেষ্টা চলছে। পুরো পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে।’’