বিপদ: খাদে পড়ে যাওয়া সেই গাড়িটি। উদ্ধারকাজে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র।
সিকিমের গ্যাংটক থেকে লাচুং যাওয়ার পথে শনিবার রাতে গাড়ি খাদে পড়ে পাঁচজন পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার রাত থেকে ছোট গাড়ির চালক-সহ ৬ জন নিখোঁজ ছিলেন। রবিবার সকালে খাদে গাড়িটি পাওয়া যায়। লাচুং থেকে ১৩ কিলোমিটার দক্ষিণে খিদাম এলাকার ঘটনা। সিকিম পুলিশ সূত্রের খবর, মৃতেরা সকলেই মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা। মৃতদের নাম সুরেশ পুনামিয়া (৪০), তোরাল পুনামিয়া (৩৭), দেবাংশী পারিমিয়া (১০), হিরাল পারিমিয়া (১৫), জয়ান পারমার (১৪) এবং চালক সমি বিশ্বকর্মা। চালক ছাড়া বাকিরা ঠানে এলাকার বাসিন্দা। চালক সিকিমের। চুংথাংয়ের এসডিপিও এলবি ছেত্রী বলেছেন, ‘‘শনিবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে।’’
সিকিম পুলিশ সূত্রের খবর, ১৯ জনের দলটি সিকিমে ঘোরার জন্য এসেছিল। শনিবার দুপুরের পর দলটি গ্যাংটক থেকে লাচুংয়ের দিকে রওনা হয়। টুং অবধি তিনটি গাড়ি একসঙ্গে ছিল। পরে দু’টি গাড়ি চুংথাং হয়ে লাচুং পৌঁছে যায়। গ্যাংটক থেকে লাচুংয়ের ছয় ঘণ্টার রাস্তায় যাওয়ার পর তৃতীয় গাড়িটির খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। রাত ১১টার পর লাচুং থেকে খোঁজখবর শুরু হয়। কিন্তু গাড়িটির কোনও হদিশ মেলেনি। রবিবার সকাল থেকে গোটা রাস্তায় তল্লাশি শুরু হয়। পুলিশের সঙ্গে সেনা বাহিনী, লাচুং হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা এবং স্থানীয় খোঁজ করতে থাকেন। খিদাম এলাকায় উল্লেখযোগ্য কিছু চাকার দাগ সবার নজর আসে।
খোঁজ শুরু হতেই খাদের জঙ্গলের ৬০০ ফুট নিচে দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া গাড়িটি দেখতে পাওয়া যায়। তার পরে একে একে দেহগুলিতে বার করে উপরে তোলার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। দুপুরে দেহগুলির ময়নাতদন্ত হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তের পর অনুমান, একটা চড়াই রাস্তায় ওঠার সময় গাড়ির গিয়ার বদলের সময় সমস্যা হয়ে থাকতে পারে। তাতে ব্রেকও ঠিকঠাক না ধরায় গাড়ি পিছন দিয়ে হুড়মুড়িয়ে নামতে থাকে। চালক আর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি। পিছন হয়েই গাড়িটি সোজা খাদে গিয়ে পড়েছে। অন্ধকার রাত, জঙ্গলের এলাকা হওয়ায় কেউ আর তা দেখেননি। তা ছাড়া রাতে ওই ধরনের রাস্তায় কমই গাড়ি চলে।
হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সচিব সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘অত্যন্ত মর্মান্তিক ঘটনা। আমরা চালকদের তো বটেই পর্যটকদেরও রাতে অত্যন্ত প্রয়োজন না হলে পাহাড়ি রাস্তায় চলাচলে নিষেধ করি। আর বৃষ্টি মাঝেমধ্যে হওয়ায় রাস্তাও খারাপ হয়েছে।’’