গঙ্গারামপুরের বানগড়। —নিজস্ব চিত্র।
দক্ষিণ দিনাজপুরের বাণগড়কে পর্যটন ক্ষেত্র হিসেবে গড়ে তুলতে উদ্যোগী ভারতের পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগ (এএসআই)। গঙ্গারামপুরের বিজেপি বিধায়ক সত্যেন রায় সম্প্রতি দিল্লিতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে কথা বলেছেন। বিধায়কের দাবি, ‘‘খুব শীঘ্রই বাণগড়কে পর্যটনক্ষেত্র হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ শুরু হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে তিন কোটি টাকাও বরাদ্দ করেছে পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ।’’
জেলার গঙ্গারামপুর শহরের উপকণ্ঠে রয়েছে বাণগড়। ইতিহাস-চর্চাকারীদের দাবি, এই বাণগড়ে তাম্রপ্রস্তর যুগ থেকে মৌর্য, গুপ্ত ও পাল যুগ হয়ে মোগল আমল পর্যন্ত উন্নত জনপদ ছিল। ২০০৭ সালে পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ প্রথম খনন কাজ করে। পরে, ২০০৯-২০১১ সাল পর্যন্ত দ্বিতীয় দফার খননকার্য করে এএসআই। তার পরে আর খননকাজ এগোয়নি। বাণ রাজার কাহিনি জড়িয়ে থাকা এই ঐতিহাসিক জায়গায় সারা বছরই পর্যটকেরা আসেন। কিন্তু উন্মুক্ত থাকায় বাণগড়ের ঐতিহ্য নষ্ট হচ্ছে।
অভিযোগ, বাণগড়ের ইট চুরি যাচ্ছে। দখল হয়ে যাচ্ছে বাণগড়ের জায়গাও। এমনকি, সংরক্ষিত জায়গাটি উন্মুক্ত থাকায় ধান ও সর্ষের চাষও করেন স্থানীয়েরা। অভিযোগ, এই ভাবে অনিয়ন্ত্রিত ঘোরাফেরা ও জমি দখলের কারণে বাণগড়ের পর্যটন সম্ভাবনার ভবিষ্যৎ নষ্ট হচ্ছে। বাণগড়কে ঘিরে এখানে পর্যটনক্ষেত্র গড়ে তোলার দাবি জেলাবাসী বহু বার দাবি করেছেন। বিধায়ক জানান, তাঁরা এএসআইয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন, যাতে দ্রুত বাণগড়কে সুরক্ষিত করে পর্যটনের বিকাশ করা যায়। গোটা বাণগড় ঘিরে সুদৃশ্য গেট নির্মাণ করে পর্যটকদের টানতে সংস্কারের কাজ হবে। এ জন্য ৩০ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে জায়গাটি ঘিরতে তিন কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। জেলার ইতিহাস গবেষক সমিত ঘোষ বলেন, ‘‘এই কাজটি হওয়া অত্যন্ত জরুরি। জেলার অন্যতম পর্যটন ক্ষেত্র হিসেবে বাণগড় তৈরি হলে, গঙ্গারামপুরের অর্থনীতিরও উন্নতি হবে। তবে বিজ্ঞানসম্মত ভাবে ফের খনন করা দরকার।’’ তাঁর দাবি, সেখানে প্রয়োজনের তুলনায় খননকার্য করা হয়নি। আরও ভাল ভাবে খনন চালালে অনেক নতুন তথ্য মিলবে।