গন্ডার শিকারের আগেই উদ্ধার একে ৪৭, ধৃত তিন

খবরটা দিন কয়েক ধরেই ভাসছিল— জলদাপাড়ার ঘাসবনে ফের পা পড়েছে চোরাশিকারিদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৬ ০১:৩৩
Share:

একে ৪৭ উদ্ধার করার পরে ধৃতরা। ছবি: রাজকুমার মোদক।

খবরটা দিন কয়েক ধরেই ভাসছিল— জলদাপাড়ার ঘাসবনে ফের পা পড়েছে চোরাশিকারিদের।

Advertisement

দলবদল নিয়ে, অসমের সেই চোরাকারবারিরা যে নিভৃতে সেঁদিয়ে গিয়েছে বনে, পুজোর মুখে সে খবরটাও এসেছিল বন কর্তাদের কাছে।

কিন্তু সদ্য-বর্ষায় ঘন ভেরিভেটা ঘাসে টইটুম্বুর বনে তাদের খোঁজ মিলবে কি করে?

Advertisement

বনকর্মীরা তাই নজরে রাখছিলেন এলাকার বনবস্তি আর স্নেদহভাজনদের। কাজ হয়েছিল তাতেই। গত তিন দিন ধরে নাগাড়ে নজরে রাখার পরে শেষতক চিলাপাতা রেঞ্জের মেন্দাবাড়ি বিটে একটি জঙ্গল লাগোয়া বাড়িতে হানা দিয়ে হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়েছে তিন চোরাশিকারিকে। সেই সঙ্গে উদ্ধার হয়েছে, গন্ডার শিকারের সেই মোক্ষম অস্ত্র একে-৪৭ বন্দুকটিও।

তবে, বনকর্তাদের ভ্রূ কুঁচকে দিয়েছে উদ্ধার হওয়া একটি খড়্গ। সে’টি কি সদ্য শিকার করা কোনও গন্ডারের, নাকি পুরনো? চর্চা শুরু হয়েছে তা নিয়েই।

বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বমর্ন অবশ্য তাঁর বিভাগীয় কর্মীদের এই সাফল্যে খুশি। বলছেন, ‘‘চোরাশিকারিরা ধরা পড়ায় অনেকটা স্বস্তি বোধ করছি।’’

বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আগাম খবর ছিল দুর্গা পুজোর সময় অসম বা মণিপুর থেকে আসবে চোরাশিকারিরা। আর তাদের মদত জোগাতে রয়েছে স্থানীয় কয়েকজন। সেই মত জঙ্গলে শুরু হয়েছিল নজরদারি। বিভিন্ন বনবস্তি ও গ্রামের সন্দেহ ভাজনদের গতিবিধির উপরেও শুরু হয় নজরদারি। বন আধিকারিকরা জানান, দুর্গা পুজোর সময় চার দিন অসমের এক শিকারি মেন্দাবাড়ি জঙ্গলে রেকিও চালায় বলে খবর ছিল। সেই সময় ওই এলাকায় কোন গন্ডার যাতায়াত না করায় শিকারিটি ফিরেও গিয়েছিল বলে খোঁজ পান তাঁরা।

বন্যাপ্রাণ তিন বিভাগের ডিএফও জেভি ভাস্কর জানান, উত্তর মেন্দাবাড়ির সঞ্জয় রাভার বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। তাঁর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় একটি গন্ডারের খড়গ ও একে ৪৭ রাইফেলটি।

তাকে জেরা করে, জানা গিয়েছে, অসমের গোঁসাইগাঁও এলাকার বাসিন্দা হাঙ বোড় কিছু দিন আগে রাভার সঙ্গে যোগাযোগ করে। তাদের জানায় কেজি খানেক গন্ডারের খড়গের দাম প্রায় নব্বই লক্ষ টাকা। গন্ডার মেরে খড়গ নিতে পারলে সেই টাকা ভাগাভাগি করা হবে। জানা গেছে, হাঙ বোড়র মারফত আসে ওই একে ৪৭ রাইফেলটি দুর্গা পুজোর দিন কয়েক আগে আসে মেন্দাবাড়ি এলাকায়। হাঙ নিজেও এক সহয়োগীকে নিয়ে মেন্দাবাড়ি এলাকায় শুরু করেছিল রেকি।

২০১৪ সালে জলদাপাড়া ও চিলাপাতা মিলিয়ে চারটি গন্ডার শিকার করেছিল চোরাশিকারিরা। গত বছর চোরাশিকারিদের গুলির বলি হয় তিনটে গন্ডার। এ বার?

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement