Coronavirus

২৫০ নমুনা নষ্ট করা হল আলিপুরদুয়ারে

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, গত কয়েকদিন ধরে আলিপুরদুয়ার জেলা থেকে দৈনিক গড়ে প্রায় পাঁচশো লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছিল।

Advertisement

পার্থ চক্রবর্তী

আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০২০ ০৫:৫৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

দিনে পঞ্চাশটির বেশি লালারসের নমুনা পরীক্ষা করা হবে না বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছিল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ। সেই নির্দেশিকা অমান্য করায় সোমবার আলিপুরদুয়ার থেকে পাঠানো প্রায় আড়াইশো লালারসের নমুনা ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। আরও অভিযোগ, জেলায় একটানা দু’দিনের বেশি সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় মঙ্গলবার সেই আড়াইশো লালারসের নমুনা নষ্ট করে দিতে বাধ্য হলেন আলিপুরদুয়ারের স্বাস্থ্য কর্তারা।

Advertisement

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, গত কয়েকদিন ধরে আলিপুরদুয়ার জেলা থেকে দৈনিক গড়ে প্রায় পাঁচশো লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছিল। কিন্তু মেডিক্যালে প্রচুর লালারসের নমুনা জমে যাওয়ায় চলতি সপ্তাহে প্রতিদিন আলিপুরদুয়ারের পাশাপাশি কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলা থেকে একদিনে পঞ্চাশটি করে নমুনা পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ফলে গত রবিবার থেকে জেলায় ফেরা শ্রমিকদের লালারসের নমুনা সংগ্রহ কার্যত বন্ধ করে দেন আলিপুরদুয়ারের স্বাস্থ্যকর্তারা।

কিন্তু জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা জানিয়েছেন, সম্প্রতি রাজ্য থেকেও একটি নির্দেশ আসে। যাতে প্রতি সপ্তাহে এক দিন করে পুলিশকর্মী, স্বাস্থ্যকর্মী, প্রসূতি-সহ বিভিন্ন স্তরের মানুষের থেকে দু’শো নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠাতে বলা হয়। সেই অনুযায়ী রবিবার সকালে ফালাকাটা থেকে সেই দুশোর সঙ্গে আরও প্রায় পঞ্চাশটি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। কিন্তু অভিযোগ, একদিনে পঞ্চাশটি নমুনা পরীক্ষার নির্দেশিকা অমান্য করায় সোমবার মেডিক্যাল কলেজ থেকে সেই নমুনা ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় ক্ষোভ ছড়ায় আলিপুরদুয়ার জেলা স্বাস্থ্য দফতরের অন্দরে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক পূরণ শর্মা বলেন, ‘‘রাজ্যের নির্দেশেই সোমবার নমুনা শিলিগুড়িতে পাঠানো হয়েছিল।’’

Advertisement

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, করোনা পরীক্ষা দেরি হলে সংগ্রহ করা লালারসের নমুনা প্রথম আটচল্লিশ ঘণ্টা দুই থেকে আট ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় রাখতে হয়। তার পরেও পরীক্ষা না হলে সেই নমুনা মাইনাস কুড়ি ডিগ্রি থেকে মাইনাস আশি ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় রাখতে হবে। কিন্তু আলিপুরদুয়ারে আটচল্লিশ ঘণ্টার বেশি নমুনা সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেই। সেই কারণেই ফিরিয়ে দেওয়া প্রায় আড়াইশো নমুনা এ দিন নষ্ট করে ফেলা হয় বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর। স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের একাংশ জানিয়েছেন, এ ভাবে নমুনা নষ্ট করে দেওয়ার ঘটনা এর আগে রাজ্যে ঘটেছে কিনা তা তাঁদের জানা নেই। আলিপুরদুয়ারের উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুবর্ণ গোস্বামী জানান, যাঁদের নমুনা নষ্ট করতে হল, আগামীদিনে ফের তাঁদের নমুনা সংগ্রহ করে করোনার পরীক্ষা করা হবে।

যদিও বিষয়টি নিয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের কর্তারা কিছু বলতে চাননি। তবে করোনা মোকাবিলায় উত্তরবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ আধিকারিক সুশান্ত রায় বলেন, ‘‘পরিস্থিতির কথা ভেবেই চলতি সপ্তাহে মেডিক্যাল কলেজে কম নমুনা পাঠাতে বলা হয়েছিল বিভিন্ন জেলাকে। তার পরেও আলিপুরদুয়ার জেলা থেকে কেন এতগুলো নমুনা মেডিক্যালে পাঠানো হল, তা খতিয়ে দেখব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement