কলকাতায় যাওয়ার ট্রেন ধরছেন তৃণমূলের কোচবিহার জেলার চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মণ। (ডান দিকে) নিউ আলিপুরদুয়ার ষ্টেশনে পদাতিক এক্সপ্রেসের জেনারেল কামরায় কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে তৃণমূলের আলিপুরদুয়ারের জেলা সভাপতি প্রকাশ চিক বরাইক। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব ও নারায়ণ দে
টিকিটের বদলে ব্যাজ দেখিয়ে ট্রেনে ওঠার অভিযোগ তো উঠছিলই। এ বার আবার সংরক্ষিত কামরায় চড়ে বসার অভিযোগ উঠল টিকিটবিহীন তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে। এমনকি, টিকিট কনফার্ম না হওয়া সত্ত্বে দলের কর্মী-সমর্থকদের একাংশ বাতানুকূল কামরায় উঠে পড়েন বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, এর জেরে সাধারণ যাত্রীরা তো বটেই, একুশে জুলাইয়ের সমাবেশে যোগ দিতে টিকিট কেটে ট্রেনে ওঠা আলিপুরদুয়ারের তৃণমূল শীর্ষ নেতাদের একাংশও দুর্ভোগে পড়েন। বাতানুকূল কামরার টিকিট সঙ্গে থাকা সত্ত্বেও তৃণমূলের জেলা সভাপতি প্রকাশ চিক বরাইক অবশ্য পদাতিক এক্সপ্রেসের জেনারেল কামরাতে চেপেই দলের সাধারণ কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে এ দিন কলকাতায় রওনা হন।
একুশে জুলাইয়ের সমাবেশে যোগ দিতে রবিবার থেকেই আলিপুরদুয়ারের তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা কলকাতায় যাত্রা শুরু করেছেন। সোমবারও অনেকে কলকাতায় যান। তবে রবি ও সোমবারের তুলনায় আলিপুরদুয়ার থেকে ছাড়া বা আলিপুরদুয়ারের উপর দিয়ে যাওয়া কলকাতাগামী ট্রেনগুলিতে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের ভিড় মঙ্গলবার অনেকটাই বেশি ছিল। কিন্তু অভিযোগ, আগের দু’দিনের মতোই তৃণমূলের কর্মী–সমর্থকদের অনেকে এ দিন টিকিট না কেটেই বিভিন্ন ট্রেনেরজেনারেল কামরা ও সংরক্ষিত কামরায় উঠে পড়েন। দুপুরে তিস্তা-তোর্সা এক্সপ্রেসে ওঠা শামুকতলার এক তৃণমূল কর্মী সাফ বলেন, “২০১০ সাল থেকে একুশেজুলাইয়ের সমাবেশে যাচ্ছি। প্রত্যেকবার যেমন বুকে ব্যাজ ঝুলিয়ে ট্রেনে উঠি, এ বারও সেটাই করেছি। দলের আরও অনেকে এ ভাবেই কলকাতায় যাচ্ছেন।”
তৃণমূলের জেলা সভাপতি প্রকাশ ছাড়াও জেডিএ-র চেয়ারম্যান গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা-সহ দলের আলিপুরদুয়ারের শীর্ষ নেতাদের অনেকেই এ দিন বিকালে পদাতিক এক্সপ্রেসে চেপে কলকাতায় রওনা হন। নিউ আলিপুরদুয়ার স্টেশন থেকে তাঁরা ট্রেনে ওঠেন। অভিযোগ, পদাতিক এক্সপ্রেস ও কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেসেও শুধুমাত্র বুকে ব্যাজ ঝুলিয়ে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের অনেকে কলকাতায় রওনা হন।
পদাতিক এক্সপ্রেসের বাতানুকূল কামরায় টিকিট কেটে এ দিন কলকাতায় রওনা হওয়া তৃণমূলের এক জেলা নেতা ফোনে বলেন, “টিকিট কনফার্ম না হওয়া সত্ত্বেও আমাদের কামরায় অনেকে উঠে পড়েছেন। প্রত্যেকেই আমাদের দলের লোক হওয়ায়, তাঁদের কিছু বলতেও পারছি না। এ দিকে কামরায় এতো লোক হয়ে যাওয়ায়আমাদেরই সমস্যা হচ্ছে। বাধ্য হয়েই তাই টিটি-কে অনুরোধ করলাম, তাঁদের অন্য কামরায় ব্যবস্থা করেতে।”
তবে তৃণমূলের জেলা সভাপতি প্রকাশ বলেন, “কলকাতা রওনা হওয়া দলের প্রত্যেকে টিকিট কেটে ও নিয়ম মেনে ট্রেনে চেপেছেন।” কিন্তু বাতানুকুল কামরার টিকিট থাকা সত্ত্বেও আপনি জেনারেল কামরায় উঠলেন কেন? প্রকাশের জবাব, “সাধারণ কর্মী-সমর্থকদের বেশিরভাগই এই কামরায় উঠেছেন। তাঁদের সঙ্গে কলকাতায় যেতে পারব বলেই আমিও জেনারেল কামরায় উঠেছি।”