প্রতীকী ছবি
ঘরে ফেরার পথে ফের দুর্ঘটনা। লকডাউনের পরে মরিয়া হয়ে ভিন্ রাজ্য থেকে বাড়ি ফিরতে গিয়ে একের পর এক দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন এ রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকেরা। এবার রাজ্যের মধ্যেই বাড়ির কাছাকাছি দুর্ঘটনায় পড়লেন বিহার থেকে ফেরা কোচবিহারের দিনহাটার অন্তত ২০ জন শ্রমিক। শনিবার গভীর রাতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পরিযায়ী শ্রমিক বোঝাই একটি বাস উল্টে যায় ধূপগুড়ির খলাই গ্রামের মোরাঙ্গা চৌপথী এলাকায়। পুলিশ সূত্রের খবর, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ধারে নয়ানজুলিতে বাসটি উল্টে যায়। দুর্ঘটনায় ২০ জন শ্রমিক জখম হয়েছেন। এঁদের মধ্যে দু-জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে পুলিশের একটি সূত্রের খবর।
পুলিশ জানিয়েছে, বিহারের বিভিন্ন ইটভাটার ৩৩ জন শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের লোকজন মিলে বাসটিতে দিনহাটার চৌধুরীহাটে ফিরছিলেন। বাসযাত্রী কয়েকজন শ্রমিক জানান, রাস্তা ফাঁকা দেখে বাসটি অত্যন্ত দ্রুত গতিতেই ছুটছিল। রাত ২টো নাগাদ বাসটি রাস্তার ধারে উল্টে যায়। যাত্রীদের আর্তনাদ শুনে স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে আসেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন ধূপগুড়ি থানার আইসি ও পুলিশকর্মীরা। আসেন দমকল কর্মীরাও।
পুলিশ জানায়, জখম যাত্রীদের উদ্ধার করে ধূপগুড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। জখমদের মধ্যে ৬ জন শিশুও আছে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, ২ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ওই দু-জনের চিকিৎসা চলছে। অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল।
রাতেই পুলিশ ও দমকল কর্মীরা হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া ৩১ জনকে ধূপগুড়ি বাস টার্মিনাসে নিয়ে আসেন। জখম এক শ্রমিক আমির শেখ বলেন, “আমরা বিহারের ইট ভাটায় কাজ করতাম। লকডাউনের জেরে কাজ ছিল না আমাদের। এই বাসে করে বাড়ি ফিরছিলাম। জানি না, আমাদের মতো গরিব মানুষের ভাগ্যে আর কী কী দুর্দশা অপেক্ষা করে আছে!”
ধূপগুড়ি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান রাজেশকুমার সিংহ বলেন, “রবিবার সকালে পুরসভার তরফে সকলকেই প্রয়োজনীয় খাবার দেওয়া হয়েছে। পুরসভার তরফে একটি বাস ভাড়া করে তাঁদের গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, বাসটিকে আটক করা হয়েছে। বাসের চালক পলাতক। পরিযায়ী শ্রমিকদের সড়ক পথে যাতায়াতের উপর পুলিশের নজরদারি আরও বাড়ানো হচ্ছে।