তেল উদ্ধারে অভিযানে পুলিশ। — নিজস্ব চিত্র
মাত্র চারটি বাড়িতে হানা দিয়ে অন্তত ২০ হাজার লিটার চোরাই ডিজেল এবং কেরোসিন উদ্ধার করল পুলিশ।
বুধবার সকালে নিউ জলপাইগুড়িতে ইন্ডিয়ান অয়েলের ডিপোর উল্টো দিকে থাকা কলোনিতে অভিযান চালায় পুলিশ। শিলিগুড়ি পুলিশের এসিপি (পূর্ব-২) অচিন্ত্য গুপ্ত, নিউ জলপাইগুড়ি থানার ওসি দীপাঞ্জন দাসের নেতৃত্বে চোরাই তেল মজুতের অভিযোগে একজনকে গ্রেফতারও করা হয়। বাকিরা অভিযান শুরু হওয়ার আগেই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ। এ দিন সকালে ডিপো লাগোয়া এফসিআই রোডের দু’দিক থেকে পুলিশের অভিযান শুরু হয়। তবে এ দিন যে পরিমাণ তেল উদ্ধার হয়েছে, তা এলাকায় মজুত তেলের সিকিভাগও নয় বলে বাসিন্দাদের দাবি।
সন্ধ্যের পর থেকে ডিপোর সামনে দাঁড়িয়ে থাকা তেল ভর্তি ট্যাঙ্কারগুলিতে পাইপ লাগিয়ে তেল চুরির অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। সেই তেল কলোনির বিভিন্ন বাড়ির পিছনে, কুয়োয় এমনকী ঘরেও মজুত হয় বলে অভিযোগ। রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে যোগসাজশ ছাড়া দিনের পর দিন তেল চুরি এবং মজুত সম্ভব নয় বলে বাসিন্দাদের দাবি। ইন্ডিয়ান অয়েল কর্তৃপক্ষ একাধিকবার এলাকা থেকে কলোনিকে সরিয়ে দিতে অথবা কলোনিকে সীমা পাঁচিল দিয়ে ঘিরে দেওয়ার আর্জি জানালেও, সে কারণেই পুলিশ-প্রশাসনের থেকে কোনও পদক্ষেপ হয়নি বলে অভিযোগ।
এ দিন সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ পুলিশের অভিযান শুরু হয়। তেল মজুতের ধরন দেখে চমকে যান পুলিশ কর্তারাও। ঘরের পেছনে টিনের ছাউনি দেওয়া আধা-পাকা কয়েক’টি ঘর। ঠাসাঠাসি করে তাতে প্লাস্টিকের বড় ড্রাম রাখা। প্রতিটিতে তেল ভরা। ওই ঘর থেকেই প্রায় ৪ হাজার লিটার তেল উদ্ধার করা হয়েছে। একটি বাড়ির পিছনে মাটি খুঁড়ে গর্তের মধ্যেও তেল ভর্তি ড্রাম রাখা ছিল। শিলিগুড়ি পুলিশের ডিসিপি সংমিত লেপচা বলেন, ‘‘মজুতকারীদের কয়েকজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এখনও অভিযান চলছে। কলোনি জুড়েই অভিযান চলবে।’’
যে চারটি বাড়ির গুদামে এ দিন অভিযান হয়েছে, কোনওটিতেই পুরুষ সদস্যদের পাওয়া যায়নি বলে পুলিশের দাবি। এ দিন যে ব্যক্তিকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে সে ঘোঘোমালি এলাকার বাসিন্দা। কলোনিতে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে তেল মজুত করত বলে অভিযোগ। অভিযান চালানো একটি গুদাম লাগোয়া বাড়িতে থাকা মহিলা বলেন, ‘‘গুদামে কী রাখা হয়েছিল, তা জানি না। শুধু ভাড়া দিয়েছিলাম।’’ অন্য একটি বাড়িতে থাকা অঞ্জনা সাহি বলেন, ‘‘আমার স্বামী বাইরে আছে, কিছু বলতে পারব না।’’
নিয়মিত পুলিশি অভিযান না হওয়াতেই কলোনির ঘর-গুদাম চোরাই তেলে ফুলে ফেঁপে উঠেছে বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ।