—ফাইল চিত্র।
হাতির হানার আশঙ্কায় গোটা দিন ধরে প্রাণভয়ে কাটানোর পর অবশেষে স্বস্তি। প্রায় ২২ ঘণ্টা দাপিয়ে বেড়ানোর পর রবিবার গভীর রাতে দু’টি হাতিকে জলপাইগুড়ির জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হলেন বন দফতরের কর্মীরা।
বন দফতর সূত্রে খবর, রবিবার ভোরে বৈকুণ্ঠপুরের জঙ্গল থেকে করলা নদী ধরে দু’টি হাতি জলপাইগুড়ি শহরে ঢুকে পড়ে। প্রথমে জলপাইগুড়ির আনন্দচন্দ্র কলেজের বয়েজ হস্টেলের পিছনের একটি ঝোপে সে দু’টি আশ্রয় নিয়েছিল। এর পর থেকে একাধিক এলাকায় দাপিয়ে বেড়ায় ওই হাতি দু’টি। কখনও পুরসভা এলাকার পবিত্রপাড়া সংলগ্ন ঝোঁপে তাণ্ডপ চালায়। কখনও বা আবার ঝোঁপ থেকে বার হয়ে লোকালয়ে আসার চেষ্টা করে।
দলছুট হাতির হামলায় আতঙ্কে ছিলেন ওই এলাকার বাসিন্দারা। হাতি দেখতে যাতে ভিড় না হয়, সে জন্য এলাকায় ১৪৪ ধারাও জারি করা হয়েছিল। তার মধ্যেই রবিবার দিনভর ওই হাতি দু’টিকে জঙ্গলে ফেরাতে চেষ্টা শুরু করে দেন বন দফতরের কর্মীরা। তাঁদের সাহায্যে এগিয়ে আসেন স্থানীয় মানুষজন থেকে শুরু করে বহু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং পরিবেশকর্মীরা। তবে হাতি দু’টিকে জঙ্গলে ফেরাতে রবিবার সারা দিন ধরে হিমশিম খেতে হয়েছে বনকর্মীদের। সাধারণত সন্ধ্যা নামলে লোকালয়ে আসা দলছুট হাতিকে জঙ্গলে ফেরানো শুরু করেন তাঁরা। কিন্ত হাতি দু’টিকে জঙ্গলে ফেরানোর জন্য পটকা ফাটানো থেকে শুরু করে একাধিক উপায়েও কাজের কাজ হয়নি। রাতে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। অবশেষে গভীর রাতে হাতি দু’টিকে জঙ্গলে ফেরাতে সফল হন বনকর্মীরা।
হাতি দু’টিকে জঙ্গলে ফেরানোর কাজে লেগে পড়েছিলেন জলপাইগুড়ির বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর মাস্টার ট্রেনার তথা পরিবেশকর্মী স্বরূপ মণ্ডলও। তিনি বলেন, ‘‘বনাঞ্চল থেকে দু’টি হাতি জলপাইগুড়ির শহরে ঢুকে পড়েছিল। বন দফতর, পুলিশকর্মী এবং বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পাশাপাশি স্থানীয় মানুষেরা মিলিত হয়ে দিনরাত হাতি তাড়ানোর চেষ্টা করেছে। ওই দুই বন্যপ্রাণীকে বাঁচিয়ে এবং সাধারণ মানুষের ক্ষতি না করে যাতে তাদের জঙ্গলে ফিরিয়ে দেওয়া যায়, সেটাই আমাদের লক্ষ্য ছিল। অবশেষে রবিবার রাত ১২টা নাগাদ জাতীয় সড়ক অতিক্রম করিয়ে এদের বনাঞ্চলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’