জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতাল। ফাইল চিত্র।
গত বছর থেকে এখনও পর্যন্ত হাসপাতাল ছেড়ে গিয়েছেন ১৮ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। জলপাইগুড়ি জেলা সদর হাসপাতাল ও সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের ঘটনা। এর মধ্যে ১৬ জনই শেষ আটমাসে হয় ইস্তফা দিয়েছেন অথবা অন্য কোথাও বদলির আবেদন করে চলে গিয়েছেন বলে সূত্রের খবর। তাঁদের মধ্যে তিনজন এখন ‘নোটিস পিরিয়ড’-এ।
কিন্তু কেন এমন হচ্ছে? চিকিৎসকদের একাংশের অভিযোগ, জলপাইগুড়িতে শাসকদল ঘনিষ্ঠ চিকিৎসক নেতাদের নির্দেশ না মানলেই পড়ে হচ্ছে বিভিন্ন সমস্যায়। যেমন কাউকে টানা ৩৬ ঘণ্টা কাজ করানো হচ্ছে, কাউকে দূরে কোথাও বদলি করে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। আবার কাউকে প্রতিরাতে জরুরি বিভাগে থাকতে বাধ্য করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ। সে সব না মানতে পেরেই চিকিৎসকরা ইস্তফা দিয়েছেন বলে দাবি। এখন ক্ষোভের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে এনআরএস কাণ্ড।
এখনও পর্যন্ত তিনজন স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ, দু’জন এমডি কার্ডিয়োলজিস্ট, রেডিয়োলজিস্ট, নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ, অস্থিরোগ বিশেষজ্ঞ, দু’জন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ইস্তফা দিয়েছেন। জেলা হাসপাতালেরই এক চিকিৎসকের কথায়, “একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক চলে যাওয়া মানে অপূরণীয় ক্ষতি, এখানে ১৮ জন গিয়েছেন।’’
জেলার এক চিকিৎসক গত বছর স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যানে রোগী দেখার নিরিখে উত্তরবঙ্গে সেরা হয়েছিলেন। আইএমএ-র ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সরব হওয়ায় তাঁকে প্রত্যন্ত একটি জেলায় বদলি করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
এমনকী দু’জন কার্ডিয়োলজিস্টকে দিয়ে দিনের পর দিন ‘জেনারেল ডিউটি’ করানো হয়েছে বলেও অভিযোগ। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের চিকিৎসক ছিলেন জলপাইগুড়ির সদ্য নির্বাচিত সাংসদ জয়ন্ত রায়। তিনি বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য ব্যবস্থাটাই এখন রোগাক্রান্ত। তার ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে।’’
তবে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূলের চিকিৎসক সংগঠনের নেতা ও আইএম-র জলপাইগুড়ি শাখার সম্পাদক সুশান্ত রায়। তিনি বলেন, ‘‘যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে তার একাংশও সত্য নয়। সকলের সঙ্গে আলোচনা করেই কর্তৃপক্ষ কাজের ভাগ করে দেন।’’ জেলা সদর হাসপাতালের সুপার গয়ারাম নষ্কর বলেন, “কিছু চিকিৎসক ইস্তফা দিয়েছেন। হয়তো বেশি কাজের চাপ নিতে পারেননি।’’