প্রতীকী ছবি।
ফের গণপিটুনির ঘটনা ঘটল মালদহে। এ বার মোবাইল চোর সন্দেহে ১০ বছরের এক কিশোরকে গণপিটুনির অভিযোগ উঠল। রবিবার সকালে ইংরেজবাজার থানার কোতোয়ালি বাজারের ঘটনা। বাজারে একপ্রস্ত মারধরের পর ওই কিশোরকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে কল্যাণপুরে নিয়ে গিয়ে একটি পোল্ট্রি ফার্মে আটকে ফের পেটানো হয় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে পুলিশ কিশোরটিকে উদ্ধার করে।
মালদহে একের পর এক ঘটনায় মারধর করে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ ছড়িয়েছে বিভিন্ন মহলে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কিশোর নিজের পরিচয় নিয়ে অসংলগ্ন কথাবার্তা বলেছে। হিন্দি ও অল্প বাংলাভাষী ওই কিশোরের বাড়ি সম্ভবত ঝাড়খণ্ডের তিন পাহাড়ে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, এ দিন মোবাইলটি চুরি করেছিল ওই কিশোর। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পরিচয় জানার পাশাপাশি এই চুরি চক্রে আরও কারা যুক্ত আছে তা জানার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বছরখানেক আগেও গণপিটুনির একাধিক ঘটনা ঘটেছিল মালদহ জুড়ে। পুলিশ ও প্রশাসন সচেতনতার প্রচার চালায়। তার পরও বিক্ষিপ্তভাবে গণপিটুনি ঘটে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল ৯ টা নাগাদ কোতোয়ালি আনাজ বাজারে কল্যাণপুরের বাসিন্দা অমিত দাস নামে এক যুবকের মোবাইল চুরি হয়। সে সময় বাসিন্দাদের নজরে পড়ে বহিরাগত ১০ বছরের ওই কিশোরের দিকে। বাজারের মানুষ কিশোরকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। অভিযোগ, অসংলগ্ন কথাবার্তা বলতেই শুরু হয় মারধর। বাসিন্দাদের দাবি, কিশোর চুরি করেছে বলে স্বীকার করেছে।
এরই মধ্যে, একদল যুবক ওই কিশোরকে টেনে নিয়ে যায় কল্যাণপুরে। সেখানে একটি পোলট্রি ফার্মে আটকে ফের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে সংবাদ মাধ্যমের এক কর্মী ছবি তুলতে গেলে তাঁকেও হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে কোতোয়ালি ক্যাম্পের পুলিশ গিয়ে ওই কিশোরকে উদ্ধার করে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই কিশোরের দাদু তাঁকে বাজারে নিয়ে যায়। পুলিশের দাবি, জেরায় কিশোর জানিয়েছে যে সেই দাদুই তাকে পকেটমারি ও মোবাইল চুরির কাজে নামিয়েছে। তবে দাদুর নাম, ফোন নম্বর বা ঠিকানা জানাতে পারেনি ওই কিশোর। এ দিন কোতয়ালি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তরুণ কুমার গোস্বামী বলেন, "আইন হাতে তুলে নেওয়া আমরা সমর্থন করি না। পুলিশ পুরো ঘটনার তদন্ত করে দেখুক।" ইংরেজবাজার থানার আইসি মদন মোহন রায় বলেন, "ওই কিশোরকে উদ্ধার করে তদন্ত চলছে। কারা মারধর করল, সে ব্যাপারেও খোঁজ চলছে।’’