স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
বুধ এবং বৃহস্পতিবার শাসক ও বিরোধীর ধর্না, পাল্টা ধর্না কর্মসূচিতে উত্তপ্ত হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা। তাই বিধানসভা চত্বরে যাবতীয় ধর্না বিক্ষোভ তথা প্রতিবাদ কর্মসূচির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করলেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার বিধানসভা অধিবেশনের দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে স্পিকার জানিয়ে দেন, এ বার থেকে বিধানসভা চত্বরে কোনও রকম প্রতিবাদ কর্মসূচি, বিক্ষোভ বা মিটিং, মিছিল করা যাবে না। গত দু’দিন বিধানসভা চত্বরে ঘটে যাওয়া ঘটনার উল্লেখ করে এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেছেন স্পিকার। তাঁর কথায়, ‘‘যে ধরনের ঘটনা ঘটেছে, তাতে বিধানসভা চত্বরে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটতে পারত।’’ তবে বিধানসভার স্পিকার যদি কোনও কর্মসূচি করার অনুমতি দেন, তা হলে অবশ্য তা করা যাবে। সে কথাও অধিবেশনে জানিয়ে দিয়েছেন বিমান।
স্পিকার যখন এই ঘোষণা করেন বিধানসভায়, তখন কোনও বিজেপি বিধায়ক অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন না। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছেন, বিজেপি বিধায়কদের প্রতিবাদ থামাতেই স্পিকার এমন ঘোষণা করেছেন। নির্দেশের কপি হাতে পেলে তিনি এ বিষয়ে যা করণীয়, তাই করবেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। বিজেপির প্রবীণ বিধায়ক মিহির গোস্বামী এই ঘোষণাকে জরুরি অবস্থার শামিল বলে মনে করছেন। মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার— তিন দিন ধরে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার দাবিতে তৃণমূল পরিষদীয় দল বিধানসভায় অম্বেডকর মূর্তির নীচে ধর্না অবস্থান করে। বুধ ও বৃহস্পতিবার বিধানসভার সিঁড়িতে বসেই তৃণমূলের ধর্নার পাল্টা কর্মসূচি করেন বিজেপি বিধায়কেরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে অধিবেশনের মধ্যাহ্নভোজের বিরতির সময় বিজেপি বিধায়কেরা গঙ্গাজল নিয়ে অম্বেডকর মূর্তির পাদদেশ ধুয়ে দেন। তাঁদের দাবি, তিন দিন ধরে ধর্না দিয়ে ওই জায়গাটিকে অপবিত্র করেছিল তৃণমূল, তাই তাঁরা গঙ্গাজল দিয়ে ধুয়ে পবিত্র করলেন।
এর পরেই স্পিকারের শুক্রবারের ঘোষণা। বিজেপি পরিষদীয় দল মনে করছে, তাদের প্রতিবাদের স্বরকে বন্ধ করতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিজেপি বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতি বলেন, ‘‘আমাদের মনে হচ্ছে, বিধানসভাতে ১৪৪ ধারা জারি করা হল। আমাদের নেতা শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন, তিনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবেন। কোনও সিদ্ধান্ত নিয়েই বিজেপির কণ্ঠস্বরকে রুদ্ধ করতে পারবে না বাংলা শাসকদল।’’ প্রসঙ্গত, বুধ ও বৃহস্পতিবার শাসক ও বিরোধীদের ধর্নার জেরে কলকাতা পুলিশের বড় কর্তাদের হাজির হতে হয়েছিল বিধানসভায়। যা নজিরবিহীন।