হাসপাতালে ভিড় বিজেপি নেতা-কর্মীদের

নিহত তৃণমূল কর্মীর দেহ নিতে এলেন না দলের কেউ

বিকেলে যখন নিহত দুই বিজেপি কর্মীর দেহ নিয়ে মিনাখাঁয় পুলিশ ও বিজেপি নেতাদের গোলমাল তুঙ্গে, তখন জেলা হাসপাতালের মর্গ থেকে কায়ুমের দেহ গ্রামে নিয়ে গেলেন তাঁর ভাই ও পরিবারের কয়েক জন।

Advertisement

নির্মল বসু

বসিরহাট শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০১৯ ০৩:৩৫
Share:

অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির পর সন্দেশখালি। —ফাইল চিত্র।

সকাল থেকে বিজেপি নেতা-কর্মীদের ভিড়ে উপচে পড়ল বসিরহাট জেলা হাসপাতাল চত্বর। দলের নিহত দুই কর্মীর বাড়ির লোকজনকেও দেখা গেল চোখের জল ফেলতে। কিন্তু সন্দেশখালির সংর্ঘষে নিহত তৃণমূল কর্মী কায়ুম মোল্লার (২৬) দেহ নিতে বিকেল পর্যন্ত দলের কাউকে চোখে পড়েনি।

Advertisement

বিকেলে যখন নিহত দুই বিজেপি কর্মীর দেহ নিয়ে মিনাখাঁয় পুলিশ ও বিজেপি নেতাদের গোলমাল তুঙ্গে, তখন জেলা হাসপাতালের মর্গ থেকে কায়ুমের দেহ গ্রামে নিয়ে গেলেন তাঁর ভাই ও পরিবারের কয়েক জন। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন না জেলা বা মহকুমাস্তরেরও কোনও তৃণমূল নেতা। যদিও বসিরহাট দক্ষি‌ণের বিধায়ক দীপেন্দু বিশ্বাস বলেছেন, ‘‘আমরা হাসপাতালের ভিতরেই ছিলাম। উত্তেজনা ছড়াতে পারে বলে ময়নাতদন্তের সময়ে যাইনি।’’

তবে কায়ুমের বাড়িতে এ দিন গিয়েছিলেন তৃণমূলের নেতারা। শনিবার বিকেলের সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে এ দিন দুপুরে উত্তর ২৪ পরগনার তৃণমূল নেতৃত্ব মধ্যমগ্রামে জেলা পার্টি অফিসে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেন। তার পরে রওনা দেন সন্দেশখালির দিকে। কায়ুমের বাড়ি ঘটনাস্থল, ভাঙ্গিপাড়া থেকে দু’কিলোমিটার দূরে। সেখানে গিয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, দলের নেতা সুজিত বসু, মদন মিত্ররা কায়ুমের স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে সাহায্যের আশ্বাস দেন।

Advertisement

কায়ুমের বাড়িতে গেলেও ঘটনাস্থলে তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীরা না যাওয়ায় বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এলাকার তৃণমূল সমর্থকদের একটি বড় অংশই হতাশ। বিজেপির স্থানীয় নেতাদের আবার অভিযোগ, এখানে বেশিরভাগ মানুষই মনে করছেন, কায়ুমরা অন্য গ্রাম থেকে আসার ফলেই গোলমাল হয়েছে। এই সময়ে এলাকায় গেলে জনরোষের মধ্যে পড়তে হবে জেনেই তৃণমূল নেতারা ঘটনাস্থলে যাননি। এ ব্যাপারে তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায় বলেন, ‘‘এলাকার পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ। গেলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে জেনেই আমরা ওখানে যাইনি।’’

এ দিন বসিরহাট হাসপাতালে যান বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ, সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়, অর্জুন সিংহ। ছিলেন দলের নেতা সায়ন্তন বসু, রাহুল সিংহ। হাসপাতালে সুকান্ত মণ্ডল (২৫) এবং প্রদীপ মণ্ডল (৩৫) নামে দুই নিহত কর্মীর পরিবার-পরিজনের সঙ্গে কথা বলেন বিজেপি নেতা-নেত্রীরা।

সেভ ডেমোক্র্যাসির সাত সদস্যের প্রতিনিধি দল এ দিন ভাঙ্গিপাড়া গ্রামে গিয়ে প্রদীপ ও সুকান্তর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক চঞ্চল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এতই অমানবিক ঘটনা, নিন্দা করার ভাষা নেই। অবিলম্বে রাজ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সরকারকে সদর্থক ভূমিকা নিতে হবে।’’

গোলমাল ছড়ানোর আশঙ্কায় বসিরহাট পুলিশ জেলা এলাকায় রবিবার সকাল থেকে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পরিস্থিতি বিচার করে আপাতত এই সিদ্ধান্ত। ১৪৪ ধারাও জারি করা হয়েছে।’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement