চাকলায় জল ঢালার লাইনে চলছে ঠেলাঠেিল। শুক্রবার। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়
শ্রাবণ মাসে লক্ষ লোকের ভিড় হয় চাকলায় লোকনাথ মন্দিরেও। ২০ কিলোমিটার দূরে স্বরূপনগরের কচুয়ায় পদপিষ্ট হয়ে ৫ জনের মৃত্যুর পরে নজরে এখন চাকলাও।
শুক্রবার চাকলার লোকনাথধামে গিয়ে চোখে পড়ল নানা অব্যবস্থা। মন্দিরের মূল ফটক বন্ধ থাকলেও পিছনের গেট দিয়ে ভক্তদের জল ঢালার ব্যবস্থা হয়েছে। সারিবদ্ধ ভাবে একজন করে ঢুকছেন মন্দিরে। কিন্তু কে আগে বিগ্রহে জল ঢালবেন, সে জন্য চলছে সিঁড়ি টপকে ওঠার প্রতিযোগিতা। ধাক্কাধাক্কি।
পুরুষ ও মহিলাদের একটাই লাইন। ঠাসাঠাসি করে দাঁড়িয়ে সকলে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড় থেকে আসা সঙ্গীতা নস্কর বলেন, “পুরুষেরা গায়ের উপরে ঝুঁকে পড়ে ঠেলছেন। খুবই অস্বস্তির মধ্যে জল ঢালতে হল। মহিলা-পুরুষ আলাদা লাইন থাকা উচিত।’’ গোবরডাঙার অনন্যা সরকারের কথায়, “মন্দিরের সামনে রাস্তার দু’পাশে দোকান বসেছে। ফলে রাস্তা সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে। খুব ভিড় সেখানে। কোনও বিশৃঙ্খলা দেখা দিলে কোন দিক দিয়ে আমরা নিজের রক্ষা করব, জানা নেই।’’ অনেকে জানালেন, রাতে বৃষ্টিতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ভিজতে হয়েছে। ছাউনির ব্যবস্থা নেই।
দেখা গেল, পুলিশের পক্ষ থেকে মঞ্চ বাঁধা হয়েছে। সেখানে ছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিশ্বচাঁদ ঠাকুর। তিনি অবশ্য বলেন, “দুর্ঘটনা রুখতে এখানে আগাম প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন।’’ তিনি জানান, পঞ্চায়েত প্রধান, মন্দির কমিটি ও এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে ভিড় নিয়ন্ত্রণে কী করণীয়, তা ঠিক করা হয়েছে। হুড়োহুড়ি রুখতে রাস্তার মাঝে ৪টি ড্রপগেট, গার্ডরেল রাখা হয়েছে। প্রচুর সিভিক ভলান্টিয়ার ও পুলিশ মোতায়েন আছেন।
চাকলা মন্দির কমিটির পক্ষে মানিক হাজরা বলেন, “মন্দির চত্বরে ৩৬টি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। ২৪ ঘণ্টা নজরদারি চলছে।’’ জল ঢালার সময়ে পুরুষ-মহিলা লাইন আলাদা করার বিষয়টি নিয়ে পরবর্তী সময়ে পদক্ষেপ করা হবে বলে জানান তিনি।
এ দিন বিকেলে কচুয়া থেকে চাকলায় যান খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক-সহ জেলা প্রশাসনের কর্তারা। চাকলায় সব ব্যবস্থা ঠিকঠাক আছে বলে জানান খাদ্যমন্ত্রী।