উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বাধিকার নিয়ে ধারাবাহিক বিতর্কের রাজ্যে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পূর্ণ স্বাধিকারের পক্ষে সওয়াল করলেন নাক-এর চেয়ারম্যান ভি এস চৌহান।
সোমবার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪২তম সমাবর্তনে যোগ দেন ন্যাশনাল অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল বা নাক-এর চেয়ারম্যান। তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পূর্ণ স্বাধিকার থাকা উচিত এবং তা রক্ষা করার জন্য সকলকেই এগিয়ে আসতে হবে।
নাক-প্রধানের পর্যবেক্ষণ, দেশে উচ্চশিক্ষার মান ক্রমশ নামছে। এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকার রক্ষার দায় সকলের। তাঁর স্পষ্ট কথা, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকারে কারও হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়।’’ শিক্ষা শিবিরের দাবি, স্বাধিকারের সঙ্গে মানোন্নয়নের যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে, সেটাই স্পষ্ট ফুটে উঠেছে চৌহানের বক্তব্যে। চৌহান এ দিন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আর্থিক স্বাধিকারের পক্ষেও সওয়াল করেন।
সম্প্রতি রাজ্যের উচ্চশিক্ষা আইন প্রণয়ন ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক পুনর্নিয়োগ স্থগিত করার বিরোধিতায় বেশ কয়েক বার পথে নেমেছে বিভিন্ন শিক্ষা সংগঠন। এই প্রেক্ষিতে নাকের চেয়ারম্যানের মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে শিক্ষক মহল। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বাধিকারে সরকারি হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে বিবাদ-বিতর্ক চলছে দীর্ঘদিন ধরে। রাজ্যের শিক্ষা বিলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজে সরকারি হস্তক্ষেপের সুযোগ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকারে সরকার নাক গলাবে কেন, সেই প্রশ্নে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ধারাবাহিক জবাব, সরকার টাকা দেয়। তাই তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাজেও নাক গলাবে। বিশ্ববিদ্যালয়কে জনগণের টাকা দেওয়া হচ্ছে বলেই সরকার তার হিসেব চাইতে পারে।
পারে কি না, সেই প্রশ্নের স্থায়ী ও সুষ্ঠু মীমাংসা এখনও হয়নি। তারই মধ্যে নাক-প্রধান যে কলকাতায় দাঁড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকারের পক্ষে সরব হলেন, এটা তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে শিক্ষাজগৎ।
ছাত্র নির্বাচনের ব্যাপারে অবশ্য রাজ্য সরকারের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন নাকের চেয়ারম্যান। তিনিও মনে করেন, রাজনীতির থেকে পঠনপাঠনেই ছাত্রছাত্রীদের বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত। উচ্চশিক্ষা কর্তাদের ভূমিকা নিয়েও মুখ খুলেছেন চৌহান। তিনি জানান, সম্প্রতি নাক-প্রতিনিধিরা বিভিন্ন রাজ্য সফরে বেরিয়েছিলেন এবং তাঁদের অন্যতম প্রধান আলোচ্য ছিল বেতন।