হুঁশিয়ারি মমতার

‘ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও আর নয়’

বন্‌ধ-ধর্মঘটের রাজনীতিকে তিনি আগেই ছুটি দিয়েছেন! শুক্রবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট করে দিলেন, ‘ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’-এর রাজনীতিও আর বরদাস্ত করবে না সরকার! এ ব্যাপারে বাম, কংগ্রেস, বিজেপি-কে কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে মমতা বলেন, বাংলায় নেতিবাচক রাজনীতি অনেক হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:২৩
Share:

বন্‌ধ-ধর্মঘটের রাজনীতিকে তিনি আগেই ছুটি দিয়েছেন! শুক্রবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট করে দিলেন, ‘ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’-এর রাজনীতিও আর বরদাস্ত করবে না সরকার! এ ব্যাপারে বাম, কংগ্রেস, বিজেপি-কে কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে মমতা বলেন, বাংলায় নেতিবাচক রাজনীতি অনেক হয়েছে। চৌত্রিশ বছরের বাম শাসনে তাতে এক ইঞ্চিও এগোয়নি রাজ্য। কিন্তু আর নয়!

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘এই ধরনের রাজনীতিই বাংলায় শিল্প তৈরির পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সেটা রাজ্যের সব মানুষকে বুঝতে হবে।’’

মমতার কথা শুনে অবশ্য বিরোধীরা বলছেন, বাংলায় নেতিবাচক রাজনীতির সব দায় মমতা চাইলেও অন্যের উপরে চাপাতে পারবেন না। বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘চৌত্রিশ বছর ধরে নেতিবাচক রাজনীতি কারা করেছে মানুষ ভোলেননি। শিল্প স্থাপনে বাধা কারা দিয়েছেন, সেটাও নয়।’’

Advertisement

ঘটনা হল, রাজ্য সরকারের উদ্যোগে সম্প্রতি কলকাতায় যখন শিল্প সম্মেলন হয়েছিল, তখন পাওয়ার গ্রিড বিতর্কে ভাঙড় উত্তাল। ভাঙড়ের ঘটনার প্রতিবাদে শিল্প সম্মেলনের গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন বামেরা। পথ দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিষ্ণুপুরে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর হচ্ছে। মমতার ঘনিষ্ঠ সূত্রের মতে, সে দিকেই এ দিন দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কারণ তাঁর মতে, বাম জমানায় মুড়ি-মুড়কির মতো বন্‌ধ-ধর্মঘট ডাকার কারণে বাংলার কর্মসংস্কৃতি নিয়ে এমনিই নেতিবাচক ধারণা রয়েছে শিল্প মহলে। তার সঙ্গে ‘ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’ স্লোগান রাজ্যের সর্বনাশ করে ছাড়ছে।

আরও পড়ুন: জলের অপচয় বন্ধে কড়া বার্তা মমতার

মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য স্রেফ বামেদের নিশানা করেননি। বিজেপি-কেও তীব্র আক্রমণ করে বলেছেন, ‘‘সিবিআই-কে দিয়ে চমকে লাভ হবে না।’’ কংগ্রেসকে নিয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘‘কংগ্রেসকে বলছি, বাংলার দিকে তাকাতে হবে না। তোমরা ভাল করে দিল্লি চালাও। কংগ্রেস নিজেদের দুর্বল করার কারণেই বিজেপি সুযোগ পেয়ে গিয়েছে।’’

তবে রাজনৈতিক ভাবে অতিশয় গুরুত্ব পেয়েছে নেতিবাচক রাজনীতির বিরুদ্ধে তাঁরা আঘাতটাই। মুখ্যমন্ত্রীর এই কথার পিঠে পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। বিরোধীদের বক্তব্য, রাজ্যে ভাঙচুরের রাজনীতি তৃণমূলই চালাচ্ছে। আর সেই দায় মমতা তাঁদের উপর চাপাতে চাইছেন। ভাঙড়ে অশান্তির মূলে যেমন রয়েছে আরাবুল-কাইজারদের কাজিয়া, তেমনই আউশগ্রামের ঘটনায় তৃণমূলের যোগ পাওয়া গিয়েছে। আবার দুই তৃণমূল বিধায়কের গোষ্ঠী বিবাদে ভাঙচুর হয়েছে ইসলামপুর কলেজে। এ সব কথা তুলেই এ দিন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘বাংলায় ভাঙচুরের রাজনীতির পথিকৃৎ তো মমতাই। উনি তো উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপাচ্ছেন!’’ একই ভাবে বাম নেতা সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘কারা কলেজে ভাঙচুর করছে, কারাই বা হাসপাতালে ভাঙচুর চালাচ্ছে তা মানুষ দেখতে পাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী এত সহজে মানুষকে বোকা বানাতে পারবেন না।’’ সিবিআই তদন্তের প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী নিজেই প্রশ্ন করেন, নিজেই উত্তর দেন, নিজেই খাতা দেখেন। মানুষ জানে সিবিআই তদন্ত কার নির্দেশে হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement