মমতা অভিযোগ ওড়াল সিবিডিটি।—ফাইল চিত্র।
রাজ্য সরকারের প্রকল্প থেকে শুরু করে ব্যানার-প্রচারপত্র-আমন্ত্রণপত্রে তাঁর মুখ বা ‘অনুপ্রেরণা’ নেই, এত দিন সেটা প্রায় ভাবাই যেত না। দীর্ঘদিন পরে সেই রীতি-রেওয়াজের ব্যতিক্রম হল কন্যাশ্রীর মতো কিছু প্রকল্পকে ঘিরে। দেখা যাচ্ছে, সরকারি অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্রে ‘মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণা’ শব্দগুচ্ছ নেই। কন্যাশ্রীর ষষ্ঠ বর্ষ পালনের জন্য নারী ও শিশু বিকাশ এবং সমাজকল্যাণ দফতর যে-আমন্ত্রণপত্র বিলি করেছে, তাতে ওই কথা বা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবির ঠাঁই হয়নি।
এর আগে কলকাতা পুরসভার সবুজ অভিযান নামে শুক্রবার যে-অনুষ্ঠান হয়েছে, সেটির আমন্ত্রণপত্রেও ‘মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণা’র কথা বলা ছিল না। ছিল না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবিও। সেই অনুষ্ঠানের বি়জ্ঞাপন ও আমন্ত্রণপত্রের রং ছিল সবুজ। মমতা ক্ষমতায় আসার পর থেকে সরকারি অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পত্রে ‘মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণা’ কথাটি লেখা এক প্রকার বাধ্যতামূলক ছিল। আমন্ত্রণপত্র থেকে অনুষ্ঠানের প্যান্ডেলের রং হত নীল-সাদা। কিন্তু এ বার তাতেও বদল এল। তবে কন্যাশ্রী দিবসের কার্ডটি নীল-সাদাতেই তৈরি করা হয়েছে। ১৪ অগস্ট নজরুল মঞ্চে কন্যাশ্রী দিবসের অনুষ্ঠান হবে। কেন ‘মুখ্যমন্ত্রী অনুপ্রেরণা’ বা ছবি ছাড়াই আমন্ত্রণপত্র বিলি হল? দফতরের মন্ত্রী শশী পাঁজার এই প্রশ্নের জবাব দিতে চাননি। তিনি শুধু বলেন, ‘‘এ-সব অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন’। নবান্ন সূত্রের খবর, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে ৮ অগস্ট যে-সরকারি অনুষ্ঠান হয়েছে, তার আমন্ত্রণপত্রে অবশ্য ‘অনুপ্রেরণা’ ছিল। ৯ অগস্টের পরে যে-সব অনুষ্ঠান হচ্ছে, তার আমন্ত্রণপত্রে আর ‘অনুপ্রেরণা’র কথা থাকছে না বলে জানা গিয়েছে।
প্রশাসনিক মহলেই প্রশ্ন উঠছে, কেন এই বদল? কেউ কেউ বলেছেন, প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শে এমন পরিবর্তন হয়ে থাকতে পারে। কারণ, ‘মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায়’ তৃণমূলকর্মীরা অনেক জায়গায় শৌচালয়ের উদ্বোধন পর্যন্ত করেছেন। তা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নানান চর্চা হয়েছে। যা মুখ্যমন্ত্রীর ভাবমূর্তির পক্ষে সুখকর নয়। সম্ভবত সেই কারণেই এমন বদল বলে মনে করছেন নবান্নের কর্তাদের একাংশ।