এমআর বাঙুর হাসপাতাল।—ছবি সংগৃহীত।
আসরে স্বাস্থ্য ভবন। তবু জ্বর এবং শ্বাসকষ্টের রোগিণীকে কলকাতার কোনও মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো যায়নি বলে অভিযোগ। রবিবার গভীর রাত পর্যন্ত উত্তর ২৪ পরগনার ওই মহিলাকে ভর্তি করাতে টানাপড়েন চলে। স্বাস্থ্য দফতরের খবর, টানাপড়েনের কারণ করোনা-আতঙ্ক! বসিরহাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের রোগিণীকে শেষ পর্যন্ত টালিগঞ্জের এমআর বাঙুর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
হাড়োয়ার বাসিন্দা, ৩৮ বছরের ওই মহিলা পেশায় অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী। স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের একাংশ জানান, জ্বর হওয়ায় শুক্রবার প্রথমে হাড়োয়া হাসপাতালে যান ওই মহিলা। রবিবার তাঁর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। করোনা-নজরদারির অঙ্গ হিসেবে এখন প্রতিটি জেলায় ‘সারি’ (সিভিয়র অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইলনেস) প্রক্রিয়া চলছে। সেই প্রক্রিয়ায় রবিবার সন্ধ্যায় মহিলাকে ভর্তি করানো হয় বসিরহাট হাসপাতালে। খবর পৌঁছয় স্বাস্থ্য ভবনে। রোগিণীর শারীরিক অবস্থার কথা শুনে তাঁকে কলকাতার কোনও মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানোর প্রয়োজন অনুভব করেন স্বাস্থ্য ভবনের কর্তারা। কারণ, এই প্রক্রিয়ায় রাজ্যে চার জনের দেহে করোনা ধরা পড়েছে। উত্তরবঙ্গের বাসিন্দা, ৪৪ বছরের যে-মহিলা রবিবার গভীর রাতে মারা গিয়েছেন, তিনিও সারি-তালিকায় রয়েছেন।
কিন্তু শত চেষ্টা করেও হাড়োয়ার মহিলার জন্য কলকাতার কোনও হাসপাতালে শয্যা পাওয়া যায়নি! স্বাস্থ্য ভবনের খবর, করোনা-আতঙ্কে ওই মহিলাকে ভর্তি করানোর ঝুঁকি নেননি কেউ। শেষে বসিরহাট থেকে টালিগঞ্জে পৌঁছতে অনেক সময় নষ্ট হবে জেনেও এমআর বাঙুরে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীকে ভর্তি করানো হয়। বাঙুরের সুপার শিশির নস্কর রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তীর ফোন পান।
সুপারের কথায় আশ্বস্ত হওয়ার পরে মহিলাকে বসিরহাট থেকে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়। সোমবার মহিলার লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য এসএসকেএমে পাঠানো হয়েছে।
বসিরহাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সুপার শ্যামল হালদার বলেন, ‘‘রোগিণীর শ্বাসকষ্ট ছিল। মেডিক্যাল কলেজে শয্যা না-পাওয়ায় গভীর রাতে রোগিণীকে এমআর বাঙুরে স্থানান্তরিত করা হয়।’’ রোগিণী আপাতত সুস্থ বলে জানান বাঙুর হাসপাতালের সুপার শিশিরবাবু।