আদালতের-পথে: তানিয়া পরভিন।
পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই থেকে শুরু করে লস্কর-ই-তইবার মতো জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে তাঁর যোগসাজশের অভিযোগ তুলছে রাজ্য পুলিশ। বিভিন্ন ওয়েবসাইট মারফত বাদুড়িয়ার সেই তরুণী কাশ্মীরের বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের সদস্যা বলেও অভিযোগ। তানিয়া পরভিন নামে সদ্য-স্নাতক ওই তরুণীর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় এ বার তদন্তভার গ্রহণ করল ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)।
পাকিস্তানি ও কাশ্মীরি জঙ্গিদের সঙ্গে ওই তরুণীর যোগাযোগের অভিযোগ থাকায় আদালতের নির্দেশে বৃহস্পতিবার এই বিষয়ে তদন্তের দায়িত্ব নেয় এনআইএ। বাজেয়াপ্ত বিভিন্ন নথি ও কেস ডায়েরি ওই দিন তাদের হাতে তুলে দেয় রাজ্য পুলিশ। এই মামলার পরবর্তী শুনানির কথা ২১ এপ্রিল। সে-দিনই তানিয়াকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাবে এনআইএ। তরুণী জেল হাজতে আছেন। রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) হাতে ১৮ মার্চ গ্রেফতার হন তানিয়া। ইন্টারনেটে মেয়েটির জঙ্গি-সংস্রব খতিয়ে দেখে তাঁর বাড়ি থেকেই তাঁকে ধরে পুলিশ।
পুলিশি সূত্রের খবর, একাদশ শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকেই দেশ-বিরোধী জঙ্গি কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়েন তানিয়া। বাংলা, ইংরেজি, হিন্দির পাশাপাশি আরবি, উর্দু, কাশ্মীরি ভাষাতেও তিনি সমান সাবলীল। প্রেমের ফাঁদ পাততেও মেয়েটি সবিশেষ দক্ষ বলে জানাচ্ছেন গোয়েন্দারা। তাঁদের দাবি, জেরার মুখে তাঁর জঙ্গি-যোগাযোগের কথা কবুল করেছেন তানিয়া। সেই সঙ্গেই বলেছেন, পাকিস্তান বা সিরিয়ায় গিয়ে জেহাদে যোগ দেওয়ার ইচ্ছে ছিল তাঁর। এ রাজ্যে বিভিন্ন গোষ্ঠী-সংঘর্ষের খবরাখবর দেশ-বিদেশের জঙ্গিদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব ন্যস্ত ছিল তার উপরে। সামাজিক মাধ্যমে অন্তত ১০টি গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়ার মলয়পুরের বাসিন্দা ওই তরুণী। লস্করের মিডিয়া সেলের অন্যতম সদস্যা ছিলেন তিনি। বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সূত্র ধরেই আইএসআইয়ের এক কর্তার সঙ্গে তানিয়ার যোগাযোগ গড়ে ওঠে বলে জানান গোয়েন্দারা। পুলিশ জানতে পেরেছে, বসিরহাট এলাকার বিভিন্ন তরুণ-যুবকের মগজধোলাই করে ওই তরুণী তাদের জঙ্গিপনায় দীক্ষা দিতেন এবং বিভিন্ন সংগঠনে যুক্ত করতেন।
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, ওই তরুণীকে কাজে লাগিয়ে এ দেশের সেনাবাহিনীর গোপন খবর জোগাড়ের ছক কষছিল আইএসআই। তবে তাঁর গ্রেফতারের আগে পর্যন্ত সেই চেষ্টা সফল হয়নি বলেই দাবি ওই তরুণীর।
‘‘আইএসআইয়ের সব কার্যকলাপ তার পছন্দ হয়নি বলে দাবি করছে তানিয়া। জেরায় সে জানিয়েছে, ভুয়ো প্রোফাইল তৈরি করে সেনাবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতানোর জন্য তার উপরে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছিল। সে ধর্মনিষ্ঠ। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের ছবি দিতে তার আপত্তি ছিল। তাই গুপ্তচরবৃত্তির কাজ তেমন এগোয়নি,’’ বলেন এক গোয়েন্দাকর্তা।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)