NIA Raid

মাওবাদী-যোগ তদন্ত: প্রায় চার ঘণ্টা পর দু’জায়গা থেকে বেরোল এনআইএ, বাজেয়াপ্ত ফোন, হার্ডডিস্ক

প্রায় চার ঘণ্টা তল্লাশির পর পানিহাটি এবং আসানসোলের দু’টি বাড়ি থেকে বেরোলেন এনআইএ-র আধিকারিকেরা। তল্লাশির পর দু’টি বাড়ি থেকেই ফোন, ল্যাপটপ এবং হার্ডডিস্ক বাজেয়াপ্ত করেছেন তদন্তকারীরা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

আসানসোল ও পানিহাটি শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০২৪ ১৩:১৮
Share:

পানিহাটি থেকে বেরোচ্ছেন এনআইএ আধিকারিকেরা। মঙ্গলবার সকালে। —নিজস্ব চিত্র।

প্রায় চার ঘণ্টা ধরে তল্লাশির পর পানিহাটি এবং আসানসোলের দু’টি বাড়ি থেকে বেরোলেন জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-র আধিকারিকেরা। তল্লাশির পর দু’টি বাড়ি থেকেই ফোন, ল্যাপটপ এবং হার্ডডিস্ক বাজেয়াপ্ত করেছেন তদন্তকারীরা। মঙ্গলবার সকালে মাওবাদী-যোগের তদন্তে আসানসোলের ডিসেরগড় এবং পানিহাটির পল্লিশ্রী এলাকায় হানা দিয়েছিল এনআইএ। তদন্তকারী সংস্থাটির সঙ্গে ছিলেন রাজ্য পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)-এর সদস্য এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা। এনআইএ সূত্রে জানা যায়, পানিহাটি, আসানসোল ছাড়াও রাজ্যের আরও ১০টি জায়গায় তল্লাশি অভিযান চলছে।

Advertisement

এনআইএ সূত্রে জানা গিয়েছে, ছত্তীসগঢ়ের মাওবাদীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার অভিযোগ উঠেছে দুই সমাজকর্মী সুদীপ্তা পাল এবং শিপ্রা চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, সুদীপ্তা এবং শিপ্রা নামের দুই মহিলা আগে আসানসোলে একটি বাড়িভাড়া নিয়ে থাকতেন। বছর পাঁচেক আগে শিপ্রা আসানসোল থেকে চলে যান। তাঁর আসল বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটির পল্লিশ্রী এলাকায়। মঙ্গলবার সেখানেও হানা দেয় এনআইএ এবং এসটিএফ। সকাল ৬টা থেকে প্রায় ১০টা পর্যন্ত দু’টি ঠিকানায় তল্লাশি চলে।

বাড়িতে এনআইএ তল্লাশির পর সুদীপ্তার অভিযোগ, তল্লাশির নামে ঘর তছনছ করেছেন তদন্তকারীরা। তাঁর আরও অভিযোগ, মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে এই তল্লাশি অভিযান হয়েছে। তাঁর কথায়, “রাঁচীর কোন একটা মামলায় এনআইএকে ঘরে তল্লাশি করার অনুমতি দেওয়া ছিল। সেই মতো তারা আজ তল্লাশি করে। তল্লাশির নামে কার্যত ঘর পুরো তছনছ করে। হার্ডডিস্কটা নিয়ে যাওয়ার ফলে আমার খুব ক্ষতি হয়ে গেল। কারণ আমার একটাই কম্পিউটার ছিল। আমি সেখানেই লেখালিখি করতাম।”

Advertisement

অন্য দিকে, পানিহাটিতে শিপ্রার বাড়ি থেকেও ফোন এবং ল্যাপটপ বাজেয়াপ্ত করে নিয়ে যায় এনআইএ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সুদীপ্তা এবং শিপ্রা নানা সামাজিক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কয়লাখনির শ্রমিকদের অধিকারের দাবিতেও সামনের সারিতে দেখা গিয়েছিল তাঁদের। ‘অধিকার’ নামক একটি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তাঁরা। পরে ‘মজদুর অধিকার’ নামে একটি সংগঠন শুরু করেন এবং কয়লাখনির শ্রমিকদের দাবিদাওয়া নিয়ে তাঁরা আন্দোলন করেন। এ ছাড়াও একাধিক মানবাধিকার সংক্রান্ত বিষয়েও সুদীপ্তা এবং শিপ্রাকে সরব হতে দেখেছেন স্থানীয়েরা।

২০২২ সালে প্রশান্ত বসু নামে এক জনকে গ্রেফতার করেছিল এনআইএ। সেই সূত্র ধরেই মঙ্গলবারের এই তল্লাশি অভিযান বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে।

মঙ্গলবার হাওড়ায় মাওবাদী-যোগের অভিযোগে এক যুবকের বাড়িতেও হানা দেয় এনআইএ। সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ এনআইএ-র একটি তদন্তকারী দল চ্যাটার্জিহাট থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ইছাপুরের কেদার ভট্টাচার্য লেনে শুদ্ধস্বত্ব রায় ওরফে ঋভুর বাড়িতে আসে। তাঁর বাবা নিমাই রায় এবং মাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। বাড়িতে প্রায় সাত ঘন্টা তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু পোস্টার, লিফলেট এবং শুদ্ধসত্ত্বের অ্যান্ড্রয়েড ফোন উদ্ধার করা হয়। বাবা নিমাই রায় জানিয়েছেন, বছর তিনেক আগে থেকেই ঋভু কার্যত ঘরছাড়া। মাঝে মাঝে বাড়িতে এলেও কয়েক ঘন্টা থেকে চলে যেতেন। গত রবিবার শেষ বার বাড়িতে এলেও সোমবার বিকেলে তিনি বাড়ি থেকে চলে যান। নিমাই একটি ছোট লেদ কারখানার মালিক। তিনি জানান, তাঁদের ছেলে কলকাতার মৌলানা আজাদ কলেজ থেকে বিকম অনার্স নিয়ে স্নাতক হয়। তার পর সে বাড়ির সঙ্গে আস্তে আস্তে সম্পর্ক গুটিয়ে নেয়। মাঝে মাঝে বাড়িতে এলেও বেশি ক্ষণ থাকত না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement