এসএসকেএমে সেই শিশু। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
ন’দিনের শিশুর পিঠে টিউমার। অবিলম্বে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু এমআরআই না-হওয়ায় গত চার দিন ধরে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা মাথায় নিয়েই এসএসকেএমে বহির্বিভাগের টিকিট কাউন্টার চত্বরে পড়ে রয়েছে ওই শিশুকন্যা।
বোলপুরের সরকারি হাসপাতাল থেকে শিশুটিকে নিয়ে শুক্রবার বিকেলে কলকাতায় পৌঁছন বাবা রবিউল খান ও মা মতিজা খাতুন। সঙ্গে এসেছেন মতিজার মা-বাবাও। সোমবার মতিজার বাবা মুজিবর শেখ জানান, বোলপুরের হাসপাতাল থেকে এনআরএসে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। শুক্রবার বিকেলে সেখানে গেলে শিশুটিকে এসএসকেএমে পাঠানো হয়। এসএসকেএমের ইমার্জেন্সি বিভাগের চিকিৎসকেরা পরদিন এসএনসিইউ বিভাগে দেখানোর পরামর্শ দেন। ফুটফুটে শিশুটির পিঠের টিউমারের আকার দেখে চিকিৎসকেরা জানান, এমআরআই করিয়ে আনলেই তাকে তাঁরা ভর্তি নিয়ে নেবেন।
এর পরেই বিপত্তির সূত্রপাত। রবিউল জানান, একরত্তি শিশুটি নড়ে যাওয়ায় এমআরআই করতে অসুবিধা হচ্ছে। এমআরআই কেন্দ্রের কর্মীরা জানান, শিশুটিকে ঘুমের ওষুধ দিয়ে এমআরআই করাতে হবে। সেই মতো রবিবার ঘুমের ওষুধ দিয়ে এমআরআই করানোর সময়েও শিশুটি নড়ে ওঠে। এর পরে এমআরআই পরীক্ষা কেন্দ্রের কর্মীরা জানান, এসএনসিইউ বিভাগের চিকিৎসকের উপস্থিতিতে এমআরআই করতে হবে। মুজিবর বলেন, ‘‘এক জন চিকিৎসক রবিবার রাতে আসবেন বলেও আসেননি। নাতনির অবস্থা ভাল নয়।’’ মতিজা বলেন, ‘‘মেয়েটা ঠিকমতো শুতে পারছে না। ডাক্তারবাবু বলেছেন, খুব যত্নে রাখতে হবে। টিউমার ফেটে গেলে বিপদ হতে পারে।’’ শুক্রবার থেকে বহির্বিভাগের টিকিট কাউন্টার চত্বরে অন্য রোগীর পরিজনদের মাঝে সেই যত্ন কী ভাবে নেওয়া সম্ভব, সেই প্রশ্ন করেছেন সদ্যোজাতের মা। শিশুকন্যার দাদু বলেন, ‘‘দূরত্ব-বিধি তো মানা হচ্ছে না। এর উপরে ওর করোনা হলে কী হবে, সেই ভয়ে রয়েছি।’’
ঘটনার কথা জানতে পেরে এসএসকেএমের এক শীর্ষ প্রশাসনিক কর্তা জানান, যত দ্রুত সম্ভব ওই শিশুকে ভর্তি করে চিকিৎসা শুরুর চেষ্টা করা হচ্ছে। রাতে ওই শিশুকে ভর্তি নেওয়া হয়েছে বলে খবর।