চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগের তদন্তে একটি কমিটি গড়েছেন ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। —নিজস্ব চিত্র।
চিকিৎসার গাফিলতিতেই সদ্যোজাত কন্যাসন্তানের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করলেন এক দম্পতি। শনিবার ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে এই অভিযোগ লিখিত ভাবে জানিয়েছেন ওই দম্পতি এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যরা। ঘটনার তদন্তে একটি কমিটি গড়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের কারও গাফিলতিতে সদ্যোজাতের মৃত্যু প্রমাণিত হলে যথাযথ পদক্ষেপ করারও আশ্বাস দিয়েছেন তাঁরা।
৯ মার্চ মধ্য রাতে প্রসবযন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঢোলাহাটের নাকালির বাসিন্দা শান্তি হালদার। পরের দিন কন্যাসন্তানের জন্ম দেন ২৩ বছরের শান্তি। সন্তান প্রসবের পর থেকেই একনাগাড়ে রক্তক্ষরণ হতে থাকে তাঁর। সেই সঙ্গে সদ্যোজাতও অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরিবারের অভিযোগ, মা ও শিশু অসুস্থ হয়ে পড়লেও সেই সময় হাসপাতালে কোনও চিকিৎসককে পাওয়া যায়নি। শিশুটিকে দীর্ঘ ক্ষণ বিনা চিকিৎসায় ফেলে রাখা হয়। এমনকি, পরিবারের লোকজন চিকিৎসকদের সঙ্গে দেখা করতে চাইলে তাঁদের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করা হয় বলে অভিযোগ। পরে অবশ্য শিশুটিকে এসএনসিইউতে ভর্তি করানো হয়। তবে শিশুটির অবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি। শনিবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ শিশুটির মৃত্যু হয়। এর পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন শান্তির পরিবারের সদস্যরা।
শান্তির স্বামী গুরুদাস হালদারের অভিযোগ, “হাসপাতাল থেকে বলা হয়েছিল যে মা ও মেয়ে, দু’জনেরই অবস্থা আশঙ্কাজনক। আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলি। কিন্তু কোনও চিকিৎসক বা নার্স এগিয়ে আসেননি। উল্টে অপমান সহ্য করতে হয়েছে।” তাঁর কথায়, “সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিলে হয়তো আমার মেয়েটা বাঁচত।”
শনিবার মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন গুরুদাস। ডায়মন্ড হারবার থানাতেও বিষয়টি জানিয়েছেন। চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ পেয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে হাসপাতালের ভাইস প্রিন্সিপাল রমাপ্রসাদ রায় বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে ৬ চিকিৎসকের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কেউ দোষী প্রমাণিত হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”