অভিনেতা তথা চণ্ডীপুরের বিধায়ক সোহম চক্রবর্তী। — ফাইল চিত্র।
নিউ টাউনের রেস্তরাঁর মালিককে মারধরের ঘটনা এ বার আদালতে পৌঁছল। অভিনেতা তথা চণ্ডীপুরের বিধায়ক সোহম চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হলেন ওই রেস্তরাঁর মালিক আনিসুল আলম। তাঁর অভিযোগ, সোহমের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করছে না পুলিশ। ঘটনার চার দিন পর ওই রেস্তরাঁর মালিক হাই কোর্টে মামলা করলেন। আনিসুলের আইনজীবীর দাবি, তাঁর মক্কেল এবং পরিবারকে হুমকি দিচ্ছেন ওই জনপ্রতিনিধি। পুলিশে অভিযোগ জানিয়েও কাজ হয়নি। মামলা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছেন বিচারপতি অমৃতা সিংহ। আগামী শুক্রবার শুনানির সম্ভাবনা।
গত শুক্রবার সন্ধ্যায় নিউ টাউনের এক রেস্তরাঁর একটি ফ্লোরে শুটিং করছিলেন সোহম। সেই সময়ই রেস্তরাঁর সামনে শুটিং ইউনিটের গাড়ি রাখা নিয়ে সোহমের নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে বচসা বাধে ওই রেস্তরাঁর মালিক আনিসুলের। তাঁর অভিযোগ, একটি পার্কিং খালি করতে বললে সোহমের নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁর উপর চড়াও হন। আরও অভিযোগ, এর পর সোহমও তাঁকে মারধর করেন। তাঁকে ঘুষি মারা হয়। এমনকি, সোহম তাঁকে সজোরে লাথি মারেন বলেও অভিযোগ করেছেন আনিসুল।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও। আনিসুলের দাবি, তিনি পুরো বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছেন। তাঁর আরও দাবি, মারধরের ভিডিয়ো সিসি ক্যামেরাতেও ধরা পড়েছে। (যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।)
মারধরের ঘটনা সম্পর্কে সোহমকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘‘অভিষেককে (বন্দ্যোপাধ্যায়) নিয়ে গালাগালি করেছে সেটা মেনে নেওয়া যায় না। চারটে চড় মেরেছি। ধাক্কা দিয়েছি। অভিনেতারাও মানুষ। আমাদেরও আবেগ আছে।’’ যদিও পরে তিনি এ ব্যাপারে ক্ষমা চান। শনিবার দুপুরে ক্ষমা চেয়ে সোহম বলেন, ‘‘আগে আমার ও আমার প্রযোজনা সংস্থার কর্মীদের উপর আক্রমণ করা হয়েছিল। অকথ্য গালিগালাজ করা হয়, কুকথা বলা হয় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামেও। সেই সময়ে মাথা ঠিক রাখতে পারিনি। কিন্তু একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে এমন কাজ করা উচিত হয়নি। আমার ভুল হয়েছে।’’
তবে তিনি এ-ও অভিযোগ করেন, যে ফুটেজ প্রকাশ্যে এনেছেন ওই রেস্তরাঁ কর্তৃপক্ষ, তাতে শুধু তাঁর মারমুখী চেহারাটাই দেখা যাচ্ছে। কিন্তু আসল ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে আধ ঘণ্টা বা ৪৫ মিনিট আগে। বিধায়ক সোহম চক্রবর্তীর তরফে পাল্টা দাবি করা হয়েছে, ওই সন্ধ্যায় তাঁরা শুটিং করতে যাওয়ার সময় থেকেই কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছিল। পরে রেস্তরাঁর মালিক অভদ্র ব্যবহার শুরু করেন। তাঁর এবং তাঁর দেহরক্ষীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়। এমনকি, দেহরক্ষীর গায়ে হাতও তোলা হয়। সেই সব ঘটনার ফুটেজ প্রকাশ্যে আসছে না। গোটা হার্ড ডিস্কটা নিয়েই চলে গিয়েছেন ওই রেস্তরাঁর মালিক। সেটা খুঁজে বার করা দরকার।