Money Laundering

Money laundering: চার মিনিটে বৃদ্ধের সব টাকা লোপাট! জালিয়াত চক্রের নয়া কায়দা ‘বুস্টার টিকা’

পুলিশের দাবি, প্রবীণদের ঠকাতে নতুন এক চক্র কার্যকর হয়ে উঠেছে। আবার এমনটাও হতে পারে যে, পুরনো চক্রই নতুন এই পদ্ধতি নিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৬:১০
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

শ্যামলেন্দু দাস বছর তিনেক আগে অবসর নিয়েছেন। অধ্যাপনা করতেন একটি সরকারি কলেজে। পেনশন ছাড়া ভরসা ছিল ব্যাঙ্কে থাকা লাখ তিনেক টাকা। কিন্তু সম্প্রতি তাঁর সেভিংস অ্যাকাউন্টের ব্যালান্স হয়ে গিয়েছে ১৩ টাকা। একটা ফোন পেয়েছিলেন বিনা খরচে বুস্টার টিকার জন্য। সাড়াও দিয়েছিলেন সেই ফোনে। এর পরে ওটিপি শেয়ার করতেই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট প্রায় শূন্য হয়ে গিয়েছে। শ্যামলেন্দুর কথা মতো গোটা ঘটনাটায় সময় লেগেছে মিনিট চারেক!
শ্যামলেন্দু অভিযোগ দায়ের করেছেন পুলিশের কাছে। কিন্তু পুলিশের বক্তব্য, শ্যামলেন্দু একা নন। প্রবীণদের ঠকাতে নতুন এক চক্র কার্যকর হয়ে উঠেছে। আবার এমনটাও হতে পারে যে কোনও পুরনো চক্রই নতুন এই পদ্ধতি নিয়েছে। জানা গিয়েছে,

Advertisement

এই ধরনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ফোন নম্বরে একটি এসএমএস আসছে। সেখানে বিনা খরচে বুস্টার টিকা পাওয়ার জন্য প্রলোভন দেখানো হচ্ছে। আর তাতে পা দিলেই জালচক্র ব্যাঙ্কের তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে।

কী ভাবে টাকা তুলে নিচ্ছে এই চক্রের প্রতিনিধিরা? জানা গিয়েছে, এসএমএস করে পাঠানো লিঙ্কে ক্লিক করতে বা একটি ফোন নম্বরে কথা বলার জন্য মেসেজ আসছে। ফোন করলে কোনও ওষুধপ্রস্তুতকারী সংস্থার প্রতিনিধি পরিচয় দিয়ে পাঠানো লিঙ্কে ক্লিক করতে বলা হচ্ছে। অনেক সময়েই গ্রাহকরা বুঝতে পারছেন না যে, ওই লিঙ্ক ক্লিক করলে ‘টিম ভিউয়ার’ বা ‘কুইক সাপোর্ট’ ধরনের অ্যাপ খুলছে। সেই অ্যাপ খুলে যাওয়ার পরে অপর প্রান্ত থেকে বলা হচ্ছে, মাত্র ১০ টাকা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। সেটা করলেই জালিয়াতরা ব্যাঙ্কে অনলাইন লেনদেনের তথ্য হাতে পেয়ে যাচ্ছে। আর তার পরে সেই টাকা উধাও হয়ে যাচ্ছে।

Advertisement

কখনও টেলিকম সংস্থার, কখনও ব্যাঙ্কের কেওয়াইসি তথ্য আপডেট করার নাম করে ফোন আসার নজির আগে অনেক দেখা গিয়েছে। অনেকের টাকা খোয়া গিয়েছে। এখন আবার করোনা নিয়ে মানুষের দুশ্চিন্তাকে কাজে লাগিয়ে নতুন পদ্ধতি। বুস্টার টিকা যেহেতু প্রবীণদেরই মূলত দেওয়া হচ্ছে, তাই তাঁরাই এখন এই পদ্ধতিতে জালিয়াতির মূল স্বীকার হচ্ছেন। পুলিশও এ নিয়ে চিন্তিত। সম্প্রতি কলকাতা পুলিশের যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অপরাধ দমন শাখা) মুরলীধর শর্মা একটি টুইট বার্তায় লেখেন, ‘প্রতারকরা জনসাধারণকে ঠকানোর নতুন উপায় বের করেছেন। ফোন বা মেসেজ করে বুস্টার ডোজ দরকার কি না, তা জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে। উত্তর হ্যাঁ হলে, একটি লিঙ্ক পাঠানো হচ্ছে এবং লিঙ্কটিতে ক্লিক করার পরে ওটিপি চাওয়া হচ্ছে। আপনারা সতর্ক থাকুন, এটি আপনার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার একটি চক্রান্ত। এ রকম ফোন বা মেসেজ এলে কোনও লিঙ্ক ডাউনলোড করবেন না এবং ওটিপি শেয়ার করবেন না।’

কিন্তু এত প্রচারেও যে কাজ হচ্ছে না, তা বুঝতে পারছে পুলিশ। প্রায় প্রতিদিনই একাধিক অভিযোগ জমা পড়তে রাজ্যের বিভিন্ন থানায়। সেখান থেকেই স্পষ্ট হচ্ছে মানুষের সচেতনতার অভাব কী ভাবে সর্বনাশ ডেকে আনছে। অন্য দিকে, জালিয়াত চক্র নিজেদের উদ্দেশ্য পূরণ করে চলেছে। এক পুলিশ কর্তার বক্তব্য, সব সময় কারা জালিয়াতি করছে তা ধরাই সম্ভব হচ্ছে না। কোনও একটি নম্বর থেকে সাফল্য মিললেই সেই নম্বরটি আর ব্যবহার করা হচ্ছে না। অনেক সময়েই দেখা যাচ্ছে নম্বরগুলি ভিন্ রাজ্যের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement