তোর্সা নদী। ছবি সংগৃহীত।
উত্তরবঙ্গের নদীর মধ্যে তোর্সা অন্যতম প্রধান। ২০১৯ সালে সেখান থেকেই নতুন প্রজাতির দুটি মাছের সন্ধান পেয়েছে ভারতের প্রাণী বিজ্ঞানীরা। শুক্রবার কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় শিবপুর বটানিক্যাল গার্ডেনে ২০১৯ সালের প্রাণী সর্বেক্ষণ বা জ়ুলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার তৈরি করা নতুন আবিষ্কারের যে তালিকা প্রকাশ করেছেন তাতেও ঠাঁই পেয়েছে ওই দুটি মাছ। তার একটির বিজ্ঞানসম্মত নাম চানা তোর্সায়েনসিস এবং অন্যটির নাম বারিলিয়াস তোর্সাই। যে নদী থেকে মাছগুলি মিলেছে সেখানের নাম অনুযায়ী এদের প্রজাতি বা স্পিসিস-এর নামকরণ হয়েছে। বিজ্ঞানসম্মত নামগুলি খটমট হলেও নামের প্রথম ভাগ বা গোত্র অনুযায়ী এরা বাঙালির অপরিচিত নয়। প্রথমটি নিখাদ ল্যাটা বা চ্যাং গোত্রের মাছ। দ্বিতীয়টি উত্তরবঙ্গের পরিচিত মাছ বোরোলির ‘তুতো’ ভাই। প্রাণী সর্বেক্ষণের তালিকায় বলা হয়েছে, প্রথমটি পাওয়া গিয়েছে আলিপুরদুয়ারের দক্ষিণ বড়ঝাড় ফরেস্ট এলাকা থেকে। বোরোলির তুতোভাইটিকে মিলেছে জলদাপাড়া থেকে।
মাছগুলি নেহাতই খাদ্য নাকি সাজানোর কাজে আসবে তা অবশ্য এখনও নিশ্চিত করেননি বিজ্ঞানীরা। প্রসঙ্গত, বছর কয়েক আগেও উত্তরবঙ্গ থেকে বোরোলির আরেকটি প্রজাতির সন্ধান পেয়েছিল প্রাণী সর্বেক্ষণ। সেই মাছটি অবশ্য রঙিন ছিল এবং মূলত অ্যাকোয়ারিয়ামের ক্ষেত্রেই তার উপযোগিতা ছিল। কিন্তু বোরোলির এই নতুন তুতো ভাইয়ের গড়ন ও রং পাতে পড়া বোরোলির মতোই লম্বা ও সাদাটে। অন্য মাছটির সঙ্গেও ল্যাটার গড়নগত সাদৃশ্য রয়েছে। প্রাণী সর্বেক্ষণ জানিয়েছে, পুঁটি মাছেরও একটি নতুন প্রজাতি এ বার দেখা গিয়েছে। তবে বঙ্গের নদী বা জলাশয়ে নয়, তার সন্ধান মিলেছে সুদূর কেরলে।
সারা বছর ধরে দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রাণী বিজ্ঞানীরা যে সব নতুন প্রজাতি আবিষ্কার করেন তার একটি তালিকা তৈরি করে প্রকাশ করে প্রাণী সর্বেক্ষণ। তারা জানিয়েছে, এ বার মোট ৩৮টি নতুন প্রজাতির মাছ মিলেছে। তালিকায় রয়েছে নতুন প্রজাতির সাপ, ব্যাঙ, শামুক এবং কীটপতঙ্গ। সব মিলিয়ে ২০১৯ সালে মোট ৩৬০টি নতুন প্রজাতির প্রাণীর সন্ধান মিলেছে। এই প্রজাতিগুলি ধরলে ভারতের মোট প্রাণী বৈচিত্র গোটা পৃথিবীর সাড়ে ৬ শতাংশ।