স্নাতক স্তরে কেন্দ্রীয় ভাবে পড়ুয়া ভর্তি হবে। প্রতীকী চিত্র।
এ বার থেকে রাজ্যের কলেজগুলিতে স্নাতক স্তরে কেন্দ্রীয় ভাবে পড়ুয়া ভর্তি নেওয়া হবে। অনলাইনে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়গুলি এই ভর্তি করাবে। বিকাশ ভবন সূত্রের খবর, এই সিদ্ধান্তে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্মতি জানিয়েছেন। এ নিয়ে আগামী সপ্তাহে সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চলেছে উচ্চশিক্ষা দফতর।
বিকাশ ভবন সূত্রের খবর, এ বার থেকে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব কেন্দ্রীয় পোর্টাল থাকবে। পড়ুয়ারা সেখানেই ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন সব কলেজের ভর্তি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য পাবেন। সেখানেই ভর্তির জন্য আবেদন করবেন। এক জন পড়ুয়া একসঙ্গে ক'টি কলেজে আবেদন করতে পারবেন, সে নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি বলেই শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর। আগে অনলাইনে আবেদন করতে হলে নির্দিষ্ট ফি দিতে হত। করোনার কারণে কলেজে আবেদনের জন্য গত দু’বছর ধরে ছাত্রছাত্রীদের ফি দিতে হচ্ছে না। এ বার তা দিতে হবে কি না, তা-ও সিদ্ধান্ত সাপেক্ষ।
শিক্ষামহলের একাংশের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় ভাবে অনলাইনে ভর্তি চালু হলে বছরের পর বছর ভর্তি নিয়ে দুর্নীতির যে অভিযোগ উঠছে, তা দূর হবে। সেই সঙ্গে কলেজগুলিতে আসন ফাঁকা থাকার সমস্যারও কিছুটা সমাধান হবে। প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে ক্ষমতায় এসে তৃণমূল সরকার কেন্দ্রীয় ভাবে পড়ুয়া ভর্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সে সময়েও শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। কিন্তু তখন সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত করা যায়নি। এ বার তা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।
বস্তুত, রাজ্যের কলেজগুলিতে বেশ কয়েক বছর ধরে অনলাইনে পড়ুয়া ভর্তি করা হলেও (বিক্ষিপ্ত ভাবে তা শুরু হয়েছিল ২০০৭ সালেই) তা কেন্দ্রীয় ভাবে হয় না। প্রতিটি কলেজ তা আলাদা ভাবে করে। ফর্ম তোলা এবং জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া অনলাইনে হলেও কাউন্সেলিংয়ের জন্য নথিপত্র নিয়ে কলেজে যেতেই হত। এবং অভিযোগ, এই স্তরেই চাপ দেওয়া এবং টাকা নিয়ে আসন পাইয়ে দেওয়ার খেলা শুরু হত এবং এ ক্ষেত্রে অভিযোগের আঙুল বার বারই উঠেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দিকে। এই দুর্নীতির অভিযোগ এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে ২০১৯ সালে ক্লাস শুরুর আগে পড়ুয়াদের কলেজে আসা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। উচ্চশিক্ষা দফতর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, ভর্তির জন্য কোনও পড়ুয়াকে কলেজ ক্যাম্পাসে আসতে হবে না। গোটা প্রক্রিয়াই অনলাইনে হবে। ভর্তির টাকাও অনলাইনে জমা দিতে হবে। ক্লাস শুরুর পরে ছাত্রছাত্রীদের নথি যাচাই করা হবে। ভর্তির সময়ে কলেজে ছাত্র সংগঠনের কোনও হেল্প ডেস্ক-ও করা যাবে না। অনলাইনেই জানা যাবে সব তথ্য। কেন্দ্রীয় ভাবে এই ভর্তির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন