শংসাপত্র বিলিতে রেকর্ড গড়ল রাজ্য সরকার। ফাইল ছবি।
তফসিলি জাতি-উপজাতি ও অন্যান্য অনগ্রসর সম্প্রদায়ের শংসাপত্র বিলিতে রেকর্ড গড়ল রাজ্য সরকার। গত দু’মাসে ১৮ লক্ষ ৬৫ হাজার শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দফতরের এক সচিব পর্যায়ের আধিকারিক। সরকারের ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পে ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম চারদিনে ওই পরিমাণ নাগরিক শংসাপত্র পেয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে। পরিসংখ্যান দিয়ে দফতরের তরফে দাবি করা হয়েছে, তফসিলি সম্প্রদায়ের মানুষজনকে ১২ লক্ষ ৬৬ হাজার শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। একই ভাবে তফসিলি উপজাতি সম্প্রদায়কে ২ লক্ষ ১১ হাজার শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, নবান্নের খাতায় প্রশাসনিক ভাবে অনগ্রসর সম্প্রদায় দু’টি ভাগে বিভক্ত। যথাক্রমে ‘এ’ এবং ‘বি’। এর মধ্যে ‘এ’ বিভাগকে ২ লক্ষ ১৬ হাজার এবং ‘বি’ বিভাগকে ১ লক্ষ ৭২ হাজার শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি, সোমবার পর্যন্ত সাড়ে ৪ হাজার শিবিরে ১০ হাজার কর্মীর মারফত ওই শংসাপত্র দেওয়া হবে। অনগ্রসর সম্প্রদায়ের দফতরের কর্মী ছাড়াও অন্য দফতরের কর্মীদেরও যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ওই কাজে লাগানো হয়েছে বলে দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে। ২০১২ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত রাজ্যের মোট ১ কোটি ৫০ লক্ষ নাগরিককে ‘ডিজিটাইজ্ড’ শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে বলেও দফতর সূত্রের খবর।
তবে এই বিরাট কর্মকাণ্ডে আবেদনপত্র বাতিলের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। কমপক্ষে ২ লক্ষ ৭ হাজার আবেদন বাতিল হয়ে গিয়েছে। প্রশ্ন করায় অনগ্রসর সম্প্রদায় উন্নয়ন দফতরের এক প্রথমসারির আধিকারিক বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘এই কর্মসূচিতে আমাদের লক্ষ্য ছিল যথাসম্ভব বেশি মানুষের কাছে পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া। তাই বিভিন্ন জায়গায় শিবির খুলে সরকারি কর্মীরা দিনরাত পরিশ্রম করে শংসাপত্র তৈরির কাজ করেছেন। তবে শংসাপত্র প্রদানের ক্ষেত্রে এটাও দেখা হয়েছে, যাতে কোনও ভুল মানুষের হাতে ওই শংসাপত্র না চলে যায়। চোখকান খোলা রেখে অত্যন্ত সজাগ ভাবে কাজ করা হচ্ছে।’’ মূলত কয়েকটি তথ্য ও নথি যাচাইয়ের পরেই শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন ওই আধিকারিক। রেফারেন্স সার্টিফিকেট, বয়সের প্রমাণপত্র, পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা কিনা— প্রাথমিক ভাবে এই বিষয়গুলি যাচাই করার পরেই শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। তাই এই বিপুল পরিমাণ শংসাপত্র প্রদানের কাজে ২ লক্ষের বেশি আবেদন বাতিলও হয়ে গিয়েছে। গ্রাহ্য ও বাতিল সমেত মোট আবেদন জমা পড়েছিল ২০ লক্ষ ৭২ হাজার। ঝাড়াইবাছাই করে ১৮ লক্ষ শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। দফতরের লক্ষ্য আগামী ৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে অন্তত ২০ লক্ষ মানুষের হাতে এই শংসাপত্র তুলে দেওয়া।