প্রাথমিক শিক্ষকদের নতুন বেতনক্রম জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করল রাজ্যের শিক্ষা দফতর। বিজ্ঞপ্তি জানাচ্ছে, এখন থেকে প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরিতে যোগ দিলে রাজ্য সরকারের তিন নম্বর বেতনক্রম অনুযায়ী বেতন মিলবে। সে-ক্ষেত্রে গ্রেড পে হবে ৩৬০০ টাকা। যা রাজ্য সরকারের আপার ডিভিশন ক্লার্কদের বেতনের সমতুল।
এত দিন প্রাথমিক শিক্ষকদের গ্রেড পে ছিল ২৬০০ টাকা। মূল বেতনের ব্যান্ড পে ছিল ৬২৪০ টাকা থেকে। অগস্ট থেকে ব্যান্ড পে হবে ৭৪৪০ টাকা। অর্থ দফতরের হিসেব অনুযায়ী সদ্য চাকরিতে যোগ দেওয়া প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন ২১,৫১৬ টাকা থেকে বেড়ে ২৬,৭৯৬ টাকা হবে। বেতন বাড়বে ৫২৮০ টাকা।
নতুন হিসেব অনুযায়ী সদ্য যাঁরা চাকরি পেয়েছেন, তাঁরাই সব চেয়ে বেশি লাভবান হবেন। কারণ, তাঁরা চাকরিতে ঢুকেই চলে যেতে পারছেন পরের ধাপের বেতনক্রমে। কিন্তু পুরনো শিক্ষকদের বেতন নতুনদের তুলনায় কমই বাড়বে। যদি নতুন হারে বেতন দিতে গিয়ে পুরনো শিক্ষকের বেতন নতুনদের চেয়ে কমে যায়, সে-ক্ষেত্রে তাঁদের ‘পে-প্রোটেকশন’ পাওয়ার কথা বলে জানাচ্ছেন অর্থ ও শিক্ষা দফতরের কর্তারা।
পুরনো শিক্ষক-শিক্ষিকারা তেমন লাভবান হবেন না কেন?
অর্থ দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, সরকার দু’নম্বর থেকে শিক্ষকদের নিয়ে গিয়েছে তিন নম্বর পে ব্যান্ডে। কিন্তু পুরনো শিক্ষকদের অনেকেরই ব্যান্ড পে ৭১০০ টাকার বেশি হয়ে গিয়েছে। ফলে তাঁদের ক্ষেত্রে শুধু গ্রেড পে-র অংশটুকুই বাড়ছে। এর ফলে পুরনো শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মূল বেতন (ব্যান্ড পে ও গ্রেড পে মিলিয়ে) তেমন বাড়ছে না। এখন রাজ্য সরকারি কর্মীদের মোট বেতন মূল বেতনের ২.৪ গুণ। তার সঙ্গে যুক্ত হয় চিকিৎসা ভাতা। মূল বেতন বড় অঙ্কে না-বাড়লে মোট বেতন বাড়ার সুযোগ কম। মূল বেতন বেশি হওয়ায় এ বারের ইনক্রিমেন্ট ৩% ধরলে তাঁরাও কিছুটা উপকৃত হবেন বলে শিক্ষা দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন।
তবে যে-সব শিক্ষক-শিক্ষিকা উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ এবং দু’বছরের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, তাঁরাই এই নতুন বেতনক্রমের সুযোগ পাবেন। শিক্ষা দফতরের কর্তাদের দাবি, বেতন কমিশনের সুপারিশ ছাড়া রাজ্যে কোনও দিন এক ধাক্কায় সরকারি চাকুরেদের বেতন এতটা বাড়েনি। প্রাথমিক শিক্ষকেরা এই বর্ধিত বেতনের পরেই ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুযোগ পাবেন। সেখানে তাঁদের বেতন আরও বাড়তে পারে। শিক্ষা দফতর এখন প্রাথমিক স্তরে পড়াশোনার হিসেব নেওয়ার কথা ভাবছে।