Centurion Prisoner

শতায়ু বন্দির জন্য মুক্তিপথের সন্ধান

বছর ছয়েকের ব্যবধানে যাবজ্জীবন সাজা শোনায় নিম্ন আদালত। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি।

Advertisement

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২০ ০৩:৪৮
Share:

প্রতীকী চিত্র।

কত বছর লৌহকপাটের আড়ালে কাটাতে হলে বন্দিশালাই হয়ে ওঠে ‘স্বাভাবিক’ জীবনের ঘর-উঠোন? সরাসরি জবাব মিলছে না। না-মিলুক, শতবর্ষীয় বন্দি রসিকচন্দ্র মণ্ডল কারাগারে ‘স্বাভাবিক’ জীবনই যাপন করে চলেছেন বলে জানাচ্ছেন কারা আধিকারিকেরা। একই সঙ্গে তাঁরা বলছেন, বয়সজনিত সমস্যা ছাড়া রসিকের তেমন কোনও শারীরিক বা মানসিক জটিলতা দেখা যায়নি।

Advertisement

না-থাকুক শারীরিক বা মানসিক জটিলতা, মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে কি রসিককে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া যায় না? যায় কি না, তা নিয়ে আলোচনা চলছে কারা দফতরে। প্যারোলে মুক্তির জন্য আবেদন করতে হয় সংশ্লিষ্ট বন্দিকেই। কয়েক দশক বন্দিশালার সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, হাতে-গোনা ব্যতিক্রম ছাড়া ৮৫-৯০ বছর বয়সে লৌহকপাটে আবদ্ধ থাকেন না কেউ। একশো বছর বয়সে বন্দি থাকার উদাহরণ কারা দফতরের কেউই দিতে পারছেন না।

রসিক নিজে বলেন, বয়স তাঁর একশো। তবে খাতায়-কলমে তাঁর শতবর্ষ পূর্ণ হতে কয়েক মাস বাকি। এই বয়সে জেলে কেন? খুনের মামলায় রসিকের এই সুদীর্ঘ কারাবাস। সেই হত্যাকাণ্ড তিন দশক আগেকার। এক নভেম্বরের গোড়ায় কালীপুজোর রাতে স্ত্রীর সঙ্গে খাবার খাচ্ছিলেন এক ব্যক্তি। সেই সময় তাঁকে লাঠি দিয়ে মারধরের পরে গুলি করে হত্যা করা হয়। সেই ঘটনায় নাম জড়িয়ে যায় রসিকের।

Advertisement

বছর ছয়েকের ব্যবধানে যাবজ্জীবন সাজা শোনায় নিম্ন আদালত। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। সেখানে জামিন মেলে। কিন্তু বিচার প্রক্রিয়া শেষে নিম্ন আদালতের রায়ই বহাল রাখে হাইকোর্ট। তখন থেকে কারান্তরালেই রয়েছেন রসিক। স্বাভাবিক নিয়মে বয়স বেড়েছে মালদহের মানিকচকের বাসিন্দা রসিকচন্দ্রের। তাঁর বর্তমান সাকিন মালদহ জেলা জেল। কারা আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, এ রাজ্যে এখন প্রবীণতম বন্দি রসিকই।

বালুরঘাট সেন্ট্রাল জেলে রাখা হয়েছিল ওই বৃদ্ধকে। কিছু দিন আগে তাঁকে পাঠানো হয় মালদহ জেলা জেলে। এখন সেখানেই রয়েছেন তিনি। বার্ধক্যজনিত সমস্যা দেখা দিলে মাঝেমধ্যে শারীরিক পরীক্ষার জন্য তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। গত দু’-তিন ধরে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। বয়স তাঁর মুক্তির ব্যবস্থা করতে পারে কি না, নানা দিক থেকে সেটাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement